২ ম্যাচের টানা জয়ের পর পরের ধাপে বাংলাদেশ

Capture

দক্ষিণ আফ্রিকায় চলমান আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দাপট অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৯ নারী ক্রিকেট দল। প্রথম ম্যাচে পরাশক্তি অস্ট্রেলিয়ার পর গতকাল শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছে ১০ রানে। প্রথমে ব্যাট করে আফিয়া হুমাইরা আমান প্রত্যাশা ও স্বর্ণা আক্তারের হাফ সেঞ্চুরিতে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রানের বড় পুঁজি গড়ে বাংলাদেশ। ১৬৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শ্রীলঙ্কা ৪ উইকেট হারিয়ে করতে পেরেছে ১৫৫ রান। টানা দ্বিতীয় জয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই টুর্নামেন্টের পরের ধাপে উঠে গেছে দিশা বিশ্বাসের বাংলাদেশ।

এই পরের ধাপটা মূলত ‘সুপার টুয়েলভ’। গ্রুপপর্বের ৪ গ্রুপের প্রতিগ্রুপ থেকে ৩টি করে দল ‘সুপার টুয়েলভে’ উঠবে। তবে সেই ১২ দল দুই ভাগে ভাগ হয়ে পরের ধাপে খেলবে। আইসিসি তাই ‘সুপার টুয়েলভ’ না বলে বাহারি নাম দিয়েছে-‘সুপার সিক্স গ্রুপ ১’ ও ‘সুপার সিক্স গ্রুপ ২’।  গ্রুপপর্বে বাংলাদেশ যেহেতু গ্রুপ এ-তে খেলছে, পরের ধাপে তাই ‘সুপার সিক্স গ্রুপ ১’-এ খেলবে। ৬ দলের এই গ্রুপ হলেও সেখানে প্রতিটি দল ম্যাচ খেলবে মাত্র দুটি করে।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম জয়টা ছিল বেনোনির উইলোমুর পার্কের ১ নম্বর মাঠে। গতকালের জয়টা সেই উইলোমুর পার্কেরই ২ নম্বর মাঠে। মানে বেনোনির উইলোমুর পার্কটা এখন যেন বাংলাদেশের জয়োল্লাসেরই মঞ্চ। আফিয়া, দিলারা, স্বর্ণাদের বীরত্বের স্বাক্ষী। অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচের মতো গতকাল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও যে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক এরাই।

টস হেরেও প্রথমে ব্যাটিং পায় বাংলাদেশ। আফিয়া ও মিষ্টি সাহা শুরুটা করেন ঝড়ের গতিতে। তাদের উদ্বোধনী জুটিতেই আসে ৭৫ রান। যাতে মিষ্টি সাহার অবদান ছিল ১২ রান। একপ্রান্তে মিষ্টিকে দর্শক বানিয়ে অপরপ্রান্তে ঝড় তুলেন আফিয়া প্রত্যাশা। ৩টি ছক্কা ও ৫ চারে মাত্র ৪৩ বলে ৫৩ রান করেন তিনি। দলকে ৭৫ রানে রেখে ছক্কা মেরে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করা আফিয়াই আউট হন প্রথমে, ১২তম ওভারের প্রথম বলে। ওই ওভারেই ২৪ বলে ১৪ রান করে আউট হন মিষ্টি। ইনিংসের বাকি শুধুই দিলারা ও স্বর্ণার রোমাঞ্চ ছড়ানো ব্যাটিংয়ের গল্প। পাল্লা দিয়ে ব্যাট চালিয়ে তৃতীয় উইকেটে দুজনে গড়েন অবিচ্ছিন্ন ৮৬ রানের জুটি। তবে দুজনের রান তোলার পাল্লায় স্বর্ণার ব্যাটই সচল ছিল বেশি। হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করতে শেষ বলে তার দরকার ছিল ২ রান। ঠিক ২ রান নিয়েই তিনি অপরাজিত থাকেন ২৮ বলে ৫০ রান করে। যে ইনিংসটিতে তিনি ২টি ছক্কা ও ৩টি চার মারেন। প্রথম ম্যাচের ম্যাচ-সেরা দিলারা অপরাজিত ছিলেন ২৭ বলে ৩৬ রান করে। তিনি মারেন একটি ছক্কা ও ৩টি চার।

লক্ষ্য তাড়া করতে নামা শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনারকে ২৪ রানের মধ্যেই ফিরিয়ে দেন বাংলাদেশের দুই পেসার মারুফা ও অধিনায়ক দিশা। কিন্তু এরপরই পাল্টা আঘাত হানে শ্রীলঙ্কার দুই ব্যাটসম্যান অধিনায়ক গুনারত্নে ও ভিজেরত্নে জুটি। তৃতীয় উইকেটে ৯৬ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে ভয়ই পাইয়ে দিয়েছিলেন তারা। যে পথে দুজনেই করেন হাফসেঞ্চুরি। তবে শেষ পর্যন্ত ১০ রানের সহজ জয়ই পেয়েছে বাংলাদেশ। গুনারত্নে অপরাজিত ৬০ ও ভিজেরত্নে ৫৫ রানের ইনিংস খেলেন।

বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন মারুফা আক্তার। ৪ ওভারে ১৯ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন তিনি। একটি উইকেট নেন দিশা, অন্যটি রানআউট। ম্যাচ-সেরার পুরস্কারটি ওঠে আফিয়ার হাতে।

ইমেজঃ সংগৃহীত

মন্তব্য করুন