
পঞ্চগড় বাংলাদেশের সর্ব উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি প্রাচীন জনপদ। এই জনপদে রয়েছে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকা নানা দর্শনীয় নিদর্শন।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই জেলা। পঞ্চগড় জেলার নানা দর্শনীয় স্থান ভ্রমণপিয়াসুদের সর্বদা কাছে টানে।ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ মহারাজার দিঘী, চা বাগান, রকস মিউজিয়াম, জিরো পয়েন্ট, মহানন্দা নদী, বারো আউলিয়া মাজারশাহী মসজিদ, ভিতরগড়, মিরগড়, ইত্যাদি।পঞ্চগড় শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার উত্তরে অমরখানা ইউনিয়নে অবস্থিত মহারাজার দিঘী (Maharajar Dighi)।
‘মহারাজার দিঘী’ একটি বিশালায়তনের জলাশয়। পাড়সহ এর আয়তন প্রায় ৮০০ × ৪০০ গজ। পানির গভীরতা প্রায় ৪০ শ ফুট বলে স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস। দিঘীতে রয়েছে মোট ১০টি ঘাট। পানি অতি স্বচ্ছ। প্রতিবছর বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে মহারাজার দীঘির পাড়ে এক বিশাল মেলার আয়োজন করা হয়। সে সময় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের আশেপাশের বিভিন্ন জেলা থেকেও দর্শনার্থীরা মেলায় ঘুরতে আসেন। এই বিশাল দিঘীর চারপাশে রয়েছে অনেক গাছগাছালির সবুজের কারুকার্য, সৌম্য শান্ত পরিবেশ যা এখনো সবার কাছে বিরল মনে হয়।ধারনা করা হয় পৃথু রাজা এই দিঘীটি খনন করেন। কথিত আছে পৃথু রাজা পরিবার-পরিজন ও ধনরত সহ ‘কীচক’ নামক এক নিম্ন শ্রেণীর দ্বারা আক্রমণের শিকার হয়ে তাদের সংস্পর্শে ধর্ম নাশের ভয়ে উক্ত দিঘীতে আত্মহনন করেন।
কিভাবে যাবেনঃ-
ঢাকা থেকে কল্যানপুর বা গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে নাবিল, হানিফ বা শ্যামলী পরিবহনে পঞ্চগড় যেতে পারবেন। এছাড়া দ্রুতযান,একতা ও পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, নামে আন্তঃনগর ট্রেনে ঢাকা থেকে সরাসরি পঞ্চগড়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। পঞ্চগড় বাস টার্মিনাল থেকে তেঁতুলিয়াগামী বাসে বোর্ড অফিসের সামনে নেমে রিক্সা বা ভ্যানে ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত দীঘি দেখতে যেতে পারবেন। অথবা পঞ্চগড় বাস টার্মিনালে নেমে সরাসরি ভ্যান বা আটো নিয়ে যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেনঃ-
পঞ্চগড় শহরে অবস্থিত আবাসিক হোটেলের মধ্যে সেন্টাল গেস্ট হাউজ, হোটেল মৌচাক, হোটেল রাজ নগর, হোটেল প্রীতম, হোটেল এইচকে প্যালেস, হোটেল ইসলাম প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। এছাড়া সার্কিট হাউজ ও জেলা পরিষদের ডাক বাংলোয় যোগাযোগ করে রাত্রিযাপন করতে পারবেন।
ভ্রমণ পরামর্শঃ-
অযাচিত ঝামেলা এড়াতে দীঘির ডান দিকে অবস্থিত বনের গভীরে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন।পুরো জায়গাটি ঘুরে দেখতে ২-৩ ঘণ্টার মতো সময় লাগে। প্রয়োজনে সাথে শুকনো খাবার ও পানি পরিবহণ করুন।
ইমেজ ও তথ্য- সংগৃহীত