নীলসাগর

Nilsagar

নীলফামারী জেলা সদর থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই নীলসাগর (Nilsagar)। নীলফামারী জেলার গোড়গ্রাম ইউনিয়নে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক দিঘীর নাম নীলসাগর। বর্তমানে নীলসাগরের আশেপাশের পরিবেশকে ভ্রমণপিপাসু মানুষের চিত্তবিনোদনের উপযোগী করার জন্য বিভিন্ন ধরণের সংস্কার কাজ করা হয়েছে। সাথে নির্মাণ করা হয়েছে একটি রেস্ট হাউস, প্রবেশ তোরণ এবং মসজিদ। আর দিঘীর পাড়ের ভবিষ্যৎ সৌন্দর্য অক্ষত রাখতে পাড়ে লাগানো হয়েছে বেশকিছু বিভিন্ন ধরণের বৃক্ষ। অষ্টম শতাব্দীতে বৈদিক রাজা ‘বিরাট’ এই ঐতিহাসিক দিঘিটি খনন করেন বলে ধারণা করা হয়। বিরাট রাজার নামানুসারে একসময় দিঘীটি বিরাট দিঘী নামে পরিচিতি লাভ করে৷ পরবর্তীতে অনেকে একে বিন্না দিঘি নামে ডাকতে শুরু করে এবং ১৯৭৯ সালে এই দিঘীটির নামকরণ করা হয় নীলসাগর। নীলসাগরের মোট জমির পরিমাণ ৫৩.৯০ একর। এর মধ্যে জল ভাগের মোট আয়তন ৩২.৭০ একর এবং দিঘির পাড়ের জমির পরিমাণ ২১ একর ।  

নীলসাগর দিঘীর পাড়ে আছে বনবাবুল, নারকেল, মেহগনি, শিশু এবং আকাশমণি সহ বিভিন্ন জানা-অজানা ফুল ও ফল গাছের সারি। আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত এই নীলসাগরে শীতকালে অসংখ্য অতিথি পাখির দেখা মিলে। ১৯৯৮ সালে নীলসাগরকে পাখিদের অভয়ারণ্য হিসাবে ঘোষণা করা হয়। এছাড়া প্রতি বছর চৈত্রসংক্রান্তিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন নীলসাগরে বারুণী স্নান উৎসবের আয়োজন করে থাকে। নীলসাগরের পূর্ব পাড়ে আছে একটি মন্দির এবং পশ্চিম পাড়ে দরবেশের আস্তানা। প্রায় প্রতিদিনই দরবেশের আস্তানায় দেহতত্ত্ব গানের আসর জমে। এছাড়া চৈত্র মাসের পূর্ণিমাযর সময় এখানে গ্রাম্য মেলার আয়োজন করা হয়।

কিভাবে যাবেন

সড়ক পথে ঢাকা হতে নীলফামারীর দূরত্ব ৩৯৬ কিলোমিটার এবং নীলফামারী জেলা সদরের জিরো পয়েন্ট থেকে নীলসাগরের দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার। ঢাকার গাবতলী থেকে এস আর কিংবা আগমনী পরিবহনে রংপুর ও সৈয়দপুর হয়ে নীলফামারী যাওয়া যায়।  

আর ট্রেনে যেতে চাইলে কমলাপুর হতে রংপুর পর্যন্ত যেতে পারবেন। রংপুর থেকে নীলফামারী যাওয়ার সরাসরি বাস আছে। এছাড়া ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের বিমানে চড়ে মাত্র ৩০ থেকে ৪০ মিনিটে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে পৌছাতে পারবেন। সৈয়দপুর থেকে সহজেই নীলফামারী যেতে পারবেন। নীলফামারী হতে নীলসাগর যাওয়ার জন্য অটোরিস্সা এবং সিএনজি ভাড়া করতে পারবেন।

কোথায় থাকবেন

নীলফামারী (Nilphamari) শহরে রাতে থাকার জন্য বিভিন্ন মানের বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেল রয়েছে। এদের মধ্যে এ্যাপোলো, বনফুল, অবকাশ এবং নাভানা অন্যতম।

ইমেজঃ সংগৃহীত

মন্তব্য করুন