পাতায়া

sasshunam-1594228204-82fdc60_xlarge

পাতায়া (Pattaya) অবস্থিত থাইল্যান্ডের ব্যাংকক থেকে প্রায় ১৫৮ কিলো দূরে, যেখানে রয়েছে এক অন্য রকম সৌন্দর্য। প্রতিবছর হাজারো পর্যটকের সমারোহে ভরে উঠে এই শহর। এশিয়ার মধ্যে অন্যতম একটি হানিমুন স্পট হিসেবে পরিচিত এই পাতায়া। পাতায়ার সৌন্দর্য যেন রয়েছে সমুদ্রের হাতছানির সাথে এক রঙ্গিন রাতের সমারোহ। এ যেন মুগ্ধ করা এক অন্যরকম শহর। পাতায়া তে ঘোরার জন্য অনেক শহর রয়েছে, যা কিনে সৌন্দর্যে মোড়ানো।

পাতায়ার দর্শনীয় স্থান

“পাতায়া” নামটার সাথে জড়িয়ে আছে বিনোদনের সকল আয়োজন। কি নেই এই শহরে? চাইলে সি বিচের ডেকচেয়ারে আয়েশ করে গাঁ এলিয়ে সমুদ্র দেখতে পারেন বা সৈকতের পাশে থাকা রেস্টুরেন্ট থেকে খেতে পারেন নানা ধরনের লোভনীয় খাবার। আবার ইচ্ছে হলে প্যারা গ্লাইডিং এর মতো রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার স্বাদ ও নিতে পারেন, আবার রৌদ্রজ্জ্বল দিনেসান বাথ করার মতো মজাও নিতে পারেন। পুরো শহরে ঘুরে দেখার মতো জায়গার অভাব নেই যদি আপনার সময় আর টাকার অভাব না থাকে। মূলত পাতায়া সি বিচ, শহরের প্রধান আকর্ষণ হলেও শহরের মাঝেও দেখার মতো অনেক জায়গা আছে। পাতায়া শহরে ঘুরে দেখার মতো জায়গাগুলো হল-

Sanctuary of Truth: এই পুরো স্থাপত্য শিল্পটি কাঠ দিয়ে তেরি। দৃষ্টিনন্দন এই ভবনটি প্রাচীন ধর্ম ও দর্শনের উপর শ্রদ্ধা জানানোর উদ্দেশ্যে নির্মাণ করা হয়েছে। এই জায়গা পরিদর্শন করলে আপনি থাই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, থাই বক্সিং দেখার সাথে সাথে স্পিড বোট ও হাতি বা ঘোড়ার পিঠে ঘুরে বেড়াতে পারবেন।

Khao Chi Cyan(Buddha Mountain): পাতায়া শহরের ধর্মপ্রাণ মানুষদের জন্য এক ধর্মীয় প্রতীক এই পর্বত। এই পর্বতে গোতম বৌদ্ধের ছবি খোঁদাই করা আছে। এই পর্বতের আসে পাশের প্রকৃতিও দেখার মতো সুন্দর।

Big Buddha (Wat Phra Yai): সাউথ পাতায়ার Pratumnak Hill এর উপর নির্মিত ১৮ মিটার লম্বা বৌদ্ধ মুর্তি যা সমুদ্রপৃষ্ট থেকে ১০০ মিটার উচুতে অবস্থিত। এই পাহাড় চূড়ায় রয়েছে পাতায়া ভিউ পয়েন্ট। এইখান থেকে পাতায়া সিটি এবং সাগরের সুন্দর ভিউ দেখা যায়।

Million Years Stone Park & Pattaya Crocodile Farm: এই পার্কটি বিভিন্ন বনসাই জাতীয় গাছ, রঙ্গিন ফুল, পাথর ও পানির ফোয়ারা দিয়ে ঘেরা। প্রতিদিন অসংখ্যবার দর্শকদের চাহিদা অনুযায়ী কুমিরের শো হয়ে থাকে। কুমির ছাড়াও এখানে অন্যান্য অনেক প্রাণী আছে।

Underwater World Pattaya: থাইল্যান্ডের প্রথম পানির নিচে অবস্থিত আধুনিক এ্যাকুরিয়াম, এখানে কার্প জাতীয় কৈ মাছ, শার্ক ও হাঙ্গর মাছ খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ পাবেন, মনে হবে যেন আপনিও ওদের সাথে পানিতে ভেসে বেড়াচ্ছেন।

Nong Nochtropical Botanical Garden: ছোট থেকে বড় সবারই ভালো লাগবে এখানে গেলে। এই বাগান আসলে কয়েকটি বাগানের সম্মেলিত রূপ, এখানে আছে ১৭ শতকের ফরাসি বাগান, ইউরোপিয়ান রেনেসা বাগান এবং বিভিন্ন প্রজাতি হিসেবে আলাদা বাগান, অর্কিড ফুলের বাগান। এছাড়াও আছে লাইভ শো যেখানে তলোয়ার যুদ্ধ, এতিহ্যবাহী থাই নাচ ও থাই কিক বক্সিং উপভোগ করতে পারবেন।

Mini Siam: থাইল্যান্ড সহ বিশ্বের বিস্ময়কর সৃষ্টি গুলো দেখতে ঘুরে আসতে পারেন এই মিনি সিয়াম থেকে। এখানে রয়েছে ব্যাংককের ভিক্টোরি মনুমেন্ট, ওয়াট অরুন, নিউ ইয়র্কের স্ট্যাচু অফ লিবাটি, লন্ডনের টাওয়ার ব্রিজ, সিডনীর অপেরা হাউজ এবং প্যারিসের ল’আর্ক দে ট্রিওম্পে। তবে এখানে বুকিং একদিন আগে দিতে হয়।

Repleys Believe It or Not Museum: পৃথিবীর সকল অদ্ভুত, সুন্দর ও সাড়া জাগানো জিনিসগুলো প্রদর্শনী করা আছে এই জাদুঘরে। পাতায়া শহরের এই জাদুঘর সবার বিশেষ আগ্রহের একটি জায়গা। এখানে এন্ট্রি ফি জনপ্রতি ৩৫০ বাথ।

Walking Street: পাতায়া শহরের বিনোদনের কেন্দ্রস্থল বলা যায় এই ওয়াকিং স্ট্রীট কে। দিনের বেলা নিরব থাকা walking street রাতে এক অন্য রূপ ধারন করে। বিনোদনের নানা উপকরণের সাথে সাথে এক অন্য রকম রঙ্গিন শহরের দেখা মিলবে এখানে।

Jomtien Beach: শহর থেকে ৪ কিলো দূরে অবস্থিতি এই বীচে আপনি সান বাথ করার সাথে সাথে জেট ফ্ষিইং, কিইটস সার্ফিং, প্যারা সেলিং ও উইন্ড সার্ফিংকরার মতো রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা নিতে পারবেন।

Art in Paradise: এটা মূলত একটি ইল্যুশন জাদুঘর আর ছবি প্রেমীদের জন্য একটি উপযুক্ত জায়গা।

Pattaya Floating Market: পানির উপর ভাসমান এই মার্কেটে পাবেন নানা ধরনের জিনিস।

Koh larn Island (কোরাল আইল্যান্ড): পাতায়া বীচের মতো আরেকটা সুন্দর বীচ কোরাল আইল্যান্ড। এখানে মূলত কয়েকটি বীচ একসাথে তাই সকাল বেলা রওনা দিলে ওখানে পৌঁছে ভালো ভাবে দ্বীপটা দেখা দেখা যাবে। ওয়াকিং স্ট্রীট এর শেষ প্রান্ত থেকে কোরাল আইল্যান্ড এর ফেরি ছাড়ে, সময় লাগে ৪০ থেকে ৫০ মিনিট। আবার পাতায়া বীচ থেকে স্পীড বোটেও যাওয়া যায় এই আইল্যান্ডে।

Tiger Park: এখানে বিভিন্ন প্যাকেজের মাধ্যমে বাঘ ধরার মতো মজার এক খেলায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

এছাড়াও সারা বছর জুড়ে শহরে নানা ধরনের সাংস্কৃতিক ও ফেস্টিভ্যাল শো হয় প্রায়ই। যেমন- Alangkarn Pattaya Show, The Tiffany Show” এই শো গুলো দেখলে থাইল্যান্ডের সংস্কৃতির ব্যাপারে একটা ভালো ধারনা হবে।

শহরের মধ্যে রয়েছে নানা ধরনের পার্ক যেখান বাচ্চা সহ বড়রাও বেশ মজা পাবে। যেমন- Chan Siam Park, Ramayana Water Park, Cartoon Network Amazone, Amazon Fishing Park এবং Three Kingdom Park.

এছাড়াও যেতে পারেন Elephant Village, Teddy Bear Museum, Central Festival Pattaya Beach, Anek Kusunsala, Konlanta Island, Pattaya Park Tower, Wat Yansangwararam, Pattaya Dolphin World, Mimosa Pattaya এর মতো জায়গায়।

পাতায়ার পুরো শহরে ক্লাবের কোন অভাব নেই। বেশ কিছু ক্লাবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- Mix Discotheque, Planet Earth Beach Club, Club Insomnia, Limalima, Airport Club, FFlic Cliff & Pool Club, The Pier Disco Club.

ইমেজঃ সংগৃহীত

মন্তব্য করুন