আড়িয়াল বিল

DSC_0813

বর্ষাকালে অথৈ জলরাশি আর শীতকালে বিস্তীর্ণ সবুজ শস্যক্ষেতে পূর্ণ দেশের মধ্যাঞ্চলের সবচেয়ে বড় ও প্রাচীন বিলের নাম আড়িয়াল বিল। ঢাকার দোহার, নবাবগঞ্জ এবং মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর ও সিরাজদিখান উপজেলার প্রায় ১৩৬ বর্গকিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এই বিলের অধিকাংশ অংশ মুন্সীগঞ্জ জেলার অন্তর্ভুক্ত। ধারণা করা হয়, প্রাচীনকালে গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের মিলনস্থল নদীর প্রবাহের ফলে শুষ্ক হয়ে যাওয়ার কারণে মুন্সিগঞ্জ জেলার পদ্মা ও ধলেশ্বরী নদীর মাঝে আড়িয়াল বিলের উৎপত্তি।

প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে সাজানো আড়িয়াল বিল ঋতুভেদে নতুন নতুন বৈচিত্রের প্রকাশ ঘটে। বর্ষাকালে সবুজে ঘেরা বিলের স্বচ্ছ পানিতে শাপলা, কচুরি পানার ফুল এবং নানা জাতের পাখির উপস্থিতি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে অনন্য মাত্রা যুক্ত করে। আর শীতকালে বিলের স্থলভাগে নানা ধরনের শীতকালীন সবজির চাষ করা হয়। শাপলা তোলা, নৌকায় চড়ে মাছ ধরা এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের জন্য দূর দূরান্ত থেকে অসংখ্য ভ্রমণকারী সময় কাটাতে ছুটে আসেন আপন রুপে অনন্য আড়িয়াল বিলে।

ঢাকা থেকে মুন্সিগঞ্জ জেলার অন্তর্গত শ্রীনগর উপজেলার আড়িয়াল বিলের দূরত্ব প্রায় ৪২ কিলোমিটার। ঢাকার গুলিস্থান, আবদুল্লাপুর বা মিরপুর থেকে মাওয়াগামী যেকোন বাসে চড়ে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে যাওয়া যায়। শ্রীনগরের বাজার থেকে রিকশা নিয়ে গাদিঘাট যেতে হবে। ঘাট থেকে হাতে টানা বা ইঞ্জিনচালিত নৌকায় শ্রীনগর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত আড়িয়াল বিলে যেতে পারবেন। চাইলে কয়েকজন মিলে ১০০০-১৫০০ টাকার মধ্যে নৌকা ভাড়া করে সারাদিন আড়িয়াল বিল ঘুরতে পারবেন।

ঢাকার কাছাকাছি হওয়ায় সকালে রওনা দিয়ে সন্ধ্যার মধ্যে ফিরে আসা যায়। তবে রাত্রিযাপনের প্রয়োজনে মুন্সিগঞ্জ জেলা সদরে হোটেল থ্রি স্টার ও হোটেল কমফোর্টের মতো বেশকিছু সাধারন মানের হোটেল পাবেন। এছাড়া মুন্সিগঞ্জে অবস্থিত আকর্ষণীয় রিসোর্টের মধ্যে পদ্মা রিসোর্ট, মাওয়া রিসোর্ট এবং মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্ট বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

আড়িয়াল বিলের আশেপাশে খাওয়ার জন্য ভাল কোন ব্যবস্থা নেই। তাই নিজ প্রয়োজনে শুকনা খাবার ও পানি সাথে পরিবহণ করুন। তবে মুন্সিগঞ্জে ভালো মানের খাবার হোটেল ও রেস্টুরেন্ট আছে। মুন্সিগঞ্জের চিত্তর দই, আনন্দর মিষ্টি, খুদের বৌউয়া (খুদের খিচুড়ি) এবং ভাগ্যকুলের মিষ্টি বেশ জনপ্রিয় খাবার।

মন্তব্য করুন