
রেবেকা সুলতানা দীপা, ২০০৮ সালের লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগীতার মাধ্যমে মিডিয়া জগতে পা রাখার পর থেকে করে যাচ্ছেন একের পর এক বিজ্ঞাপনচিত্রের কাজ। ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স- মাস্টার্স শেষ করা দুই সন্তানের জননী রেবেকা সুলতানা দীপা ঘর-সংসার সামলে আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশের মডেলিং জগতে। তাঁর ঈদের একাল-সেকাল নিয়ে আমাদের সাথে একান্তে আলাপ-চারিতায় দরজার ওপাশে এর পাঠকদের জন্য বললেন জানা-অজানা নানা কথা। রেবেকা সুলতানা দীপা
দরজার ওপাশে – কেমন আছেন?
আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
দরজার ওপাশে – ঈদ কেন্দ্রিক ব্যস্ততা কেমন এই বছর?
বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় ঈদ এ স্বাভাবিকভাবেই ব্যস্ততা একটু বেশি থাকে। এবার যেন মনে হচ্ছে সেই ব্যস্ততাটা আরও একটু বেশি। বিশেষ করে রমজানকে কেন্দ্র করে আরও নতুন কিছু কাজ যোগ হয়। এছাড়াও এই সময়টাতে তো ঘরের নিয়মিত কাজের বাইরে অন্যান্য নানা বিষয় নিয়ে ব্যস্ততা একটু বাড়ে। তো সব মিলিয়ে বেশ ব্যস্ত সময় যাচ্ছে এই বার ঈদে।
দরজার ওপাশে – ঈদে কি কি করা হয় এখন সাধারণত? পুরোটাই কি গৎবাঁধা নাকি নতুন কিছুও ট্রাই করা হয়?
সত্যি বলতে তো আমরা সবসময় বলি যে ঈদ মানে খুশি আর আনন্দ। কিন্তু আমার কাছে কিন্তু ঈদ মানে শুধু কাজ আর কাজ। বাড়তি কাজের চাপ থাকে প্রচুর, আর তার পুরো দায়িত্বটাই থাকে ঘরের মেয়েদের উপর, পরিকল্পনা থেকে শুরু করে ব্যবস্থাপনা, অতিথি আপ্যায়ন পর্যন্ত। তারপরও আমি বলবো যে, আমি আসলে অনেক ভাগ্যবতী। কারণ আমার পাশে ছায়া হয়ে আমাকে সবসময় সাপোর্ট দিয়ে আসছে আমার স্বামী। সে অনেক কো-অপারেটিভ। তাছাড়া আমিও সারাক্ষণ কাজের মধ্যে ডুবে থাকি না। সময় পেলেই নিজের মতো একটু রিল্যাক্স থাকার চেষ্টা করি। আমাদের মায়েদের মত সারাদিন শুধু রান্নাঘরে পরে থাকার মানুষ আমি না। তবে ঈদের দিনটা নিজের বাসাতেই কাঁটাতে পছন্দ করি। however
আরও পড়ুন
- দক্ষিণ এশিয়ার প্রো-বক্সিং চ্যাম্পিয়ন হলেন বাংলাদেশের সুরা কৃষ্ণা চাকমা
- ফিনল্যান্ডে গ্যাস ও বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিল রাশিয়া
দরজার ওপাশে – ঈদে কি এখন আর নিজের জন্য সময় বের করা যায় নাকি পুরোটা জুড়ে সন্তানরা?
বাচ্চারা তো প্রাইয়োরিটি লিস্টে থাকেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় পরিকল্পনাগুলো ওদের পছন্দ, সুবিধা-অসুবিধা চিন্তা করেই করা হয়, কিন্তু তাই বলে নিজের জন্য সময় দিতে ভুলি না একদমই। একটা নির্দিষ্ট সময় রাখি নিজের জন্য। নিজের বন্ধু-বান্ধব, পরিবারের লোকজনের সাথে আড্ডাবাজি, ঠাট্টা-কৌতুক যদি না করি, তবে আমার ঈদটা অপূর্ণ থেকে যায়। since
দরজার ওপাশে – আপনার ঈদ আর ওদের ঈদের মধ্যে কি কি পার্থক্য দেখেন?
পার্থক্য তো অনেক। এক্সাইটমেন্ট এর জায়গাটাকে সবচেয়ে বড় তফাত বলে আমার মনে হয়। আমরা তো ছোটবেলায় অনেক এক্সাইটেড থাকতাম ঈদের দিনকে ঘিরে। নতুন জামা, বড়দের থেকে সালামি পাওয়া, বন্ধুদের নিয়ে ঘুরাঘুরি সহ সবকিছু নিয়ে একটা অন্যরকম উত্তেজনা কাজ করত। আমার বাচ্চাদের মাঝে সেরকম কোনো কিছু দেখি না। সত্যি কথা বলতে ওদের কাছে তো কিছুই নতুন না। যখন যা চাচ্ছে, তাই পাচ্ছে। সবকিছুই সহজলভ্য। আমরা আগে পাঁচ-দশ টাকা পেলে যেমন খুশি হতাম, ওরা পাঁচশ-একহাজার হাতে পেলেও ওদের চোখে-মুখে সেই খুশির ছাপ দেখি না। এখানেই আসল পার্থক্যটা। however


দরজার ওপাশে – আপনার ছোটবেলার ঈদ সম্পর্কে কিছু বলুন। কেমন ছিল শৈশব এর ঈদ?
ছোটবেলায় ঈদ ঢাকা আর আমার গ্রামের বাড়ি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সমানভাবে কেটেছে। রোজার ঈদে ঢাকায় থাকলে, কোরবানীর ঈদ কাঁটত বি-বাড়ীয়ায়। দুই জায়গার ঈদের অভিজ্ঞতা দুই রকম। তবে যেখানেই থাকতাম প্রচুর ঘুরতাম সারাদিন। এই একটা জিনিস আমার সবসময় কমন ছিল। ঢাকা ও গ্রামের বাড়ী, দুই জায়গাতেই কমন কিছু বন্ধু-বান্ধব ছিল। আমি তাদের প্রত্যেকের বাড়ীতে যেতাম ঘুরে ঘুরে, ওরাও আসতো আমাদের বাসায়। এমনও হতো বন্ধুদের বাসায় খেতে খেতে বাড়ী তে দুপুর-রাত কোনো বেলায়ই খাওয়া হতো না। এ নিয়ে যে কত বকা খেয়েছি মায়ের কাছে, তা গুণে শেষ করা যাবে না। সালামির যে টাকা জমতো, সব একসাথে করে আমরা বন্ধুরা মিলে একটা ছোটখাটো পার্টি করতাম। এইসব মিলিয়েই ছিল আমার ছোটবেলার ঈদ। Furthermore
দরজার ওপাশে – আপনাকে যদি ছোটবেলায় ফেরত যাওয়ার সুযোগ দেয়া হয়, তবে ঈদের কোন কাজটি আপনি করবেনই করবেন?
বন্ধুদের নিয়ে ঘুরে বেড়ানো। এই জিনিসটা আমি খুব মিস করি।
দরজার ওপাশে – ছোটবেলার বন্ধুদের সাথে এখনও কি ঈদে দেখা সাক্ষাত হয়?
আনফরচুনেইটলি, তাদের সাথে এখন আর দেখা হয়না। সবাই সবার জীবন নিয়ে যে যার মত ব্যস্ত। দেখা হওয়ার সুযোগটাই আর নেই।
ফলো করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল
দরজার ওপাশে – এবারের ঈদে কি কি কাজ আসছে আপনার? নতুন কি কি বিজ্ঞাপন এ দেখতে পারবে দর্শকরা আপনাকে?
এবার ঈদে মোটামোটি অনেকগুলো কাজ হয়েছে। ৩-৪ টা বিজ্ঞাপন অন-এয়ার হওয়ার কথা রমজানের মধ্যেই। তাছাড়া একটা ওয়েব সিরিজের কাজ শেষ করলাম। আর রমজানের একটা ইফতারের রেগুলার প্রোগ্রাম করছি, এটা ৩০ রোজা পর্যন্ত টিভিতে দেখানো হবে প্রতিদিন ইফতারের আগে। so
দরজার ওপাশে – ক্যারিয়ার নিয়ে কি প্ল্যান আপনার? ৫ বছর পর নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
সত্যি কথা বলতে, ক্যারিয়ারটা যে ভাবে চিন্তা করেছি সেভাবে সবকিছু বাস্তবায়ন করতে পারিনি। অন্য ট্র্যাক এ চলে এসেছি, তবে আমার এখন একটু ভিন্ন প্যাটার্নে কাজ করার ইচ্ছা। therefore
আমি একটা নন-প্রফিটাবল অর্গানাইজেশন প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছি, যেখানে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের লেখাপড়া প্রাধান্য পাবে। এছাড়াও আরও বিভিন্ন-ধরনের কার্যক্রম চালানোর চিন্তা ভাবনা করছি। এবং অলরেডি কিছু কিছু কাজ শুরু করে দিয়েছি। আপনাদের সবার সহযোগিতা ও ভালোবাসা সাথে থাকলে, এটা নিয়েই আমি ভবিষ্যতে একটা ভালো সফলতার জায়গায় থাকতে চাই এবং কাজ করতে চাই।
[…] […]