SHAAN-শান

shan

অবৈধভাবে বিদেশ যাওয়ার কাহিনী আমরা প্রায় সময় বিভিন্ন পত্রিকা অথবা সংবাদে দেখে থাকি। সাধারনত যারা অর্থনৈতিকভাবে ভাবে একটু দুর্বল তারাই এই পথ বেঁছে নেয়। কিন্তু যারা এই পথে পা বাড়ায় তারা কি আদৌ ভালো থাকে অথবা ভালভাবে পৌঁছাতে পারে। না যারা এই পথে যায় তাদের জিবনে নেমে আসে কষ্ট, দূর্ভোগ। সেই পথে চলতে চলতে কেউ দূর্গম পথেই মারা যায় অথবা কেউ মারা যায় না খেতে পেরে। আর সব বাঁধা অতিক্রম করে কেউ যদি কোনো ভাবে বেঁচেও ফিরে তারা বিভিন্ন মানব পাচারকারীর খপ্পরে পড়ে হারায় ফুসফুস, কিডনি সহ আরো অনেক কিছু। যারা এই পাচার চক্রের সাথে জড়িত তারা বেশ শক্তিশালী। তারা বিভিন্ন ভাবে দেশ-বিদেশের সাথে শক্তিশালী প্রভাব রাখে। খুব সহজে তাদের বের করা যায়না, তাদের খুঁজে পাওয়া খুব কষ্ট সাধ্য ব্যাপার। আর এই মানব পাচারকারীদের খোঁজে পুলিশের অভিযান চালানো নিয়েই এই ‘শান’ সিনেমার কাহিনী।     

গল্পের নায়ক শানের নামেই ছবি, তার নামের অর্থ যেমন ধারালো, তেমনি সে চৌকস পুলিশ অফিসার। পুলিশ বিভাগে বেশ সুনাম আছে তার। তার মা আছে, প্রেমিকা আছে। তবে গল্পের মোড়ে তাকে নেমে যেতে হয় মানব পাচারকারীদের চক্র ধরার অভিযানে। দলবল নিয়ে বেরিয়ে পড়ে, ছদ্মবেশ নেয়। এরপর এগিয়ে যায় কাহিনি।

এই ছবির মূল সম্পদ হচ্ছে গল্প। বিশেষ করে ঢাকার সিনেমার জন্য এই ধরনের গল্প আগে কেউ বেছে নেয়নি; পাশাপাশি শুরু থেকেই ছবি এই বিষয়বস্তুকে নিয়েই এগিয়ে গেছে। অন্যদিকে মনোযোগ দেয়নি, গল্পের ধারাবাহিকতায় রোমান্স এসেছে, সেটা সামান্যই।

অভিনয়ের কথা বললে সিয়াম আহমেদ চরিত্রকে ধারণ করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন, তার জন্য সাধুবাদ পাবেন। সিয়ামের সার্বক্ষণিক সঙ্গী ফরমান আলীর চরিত্রে অভিনয় করা নূরে আলম নয়ন অনেকটাই আলো কেড়েছেন, উনার কারণে সিনেমা আরো জমে উঠেছিল। নাদের চৌধুরী যতক্ষন পর্দায় ছিলেন, ভালো লেগেছে।

পরিচালক এম রাহিমের সঙ্গে চিত্রনাট্য সাজিয়েছেন নাজিম উদ দৌলা। আজাদ খানের গল্পে চিত্রনাট্য খুব মজবুত হয়েছে বলব না, তবে দ্বিতীয়ার্ধ বেশ জমে উঠেছিল,উপভোগ্য ছিল। নবীন পরিচালক হিসেবে এম রাহিম উত্তীর্ণ। গানগুলো ভালো। মানব পাচারের দৃশ্যগুলো বেশ বাস্তবিক।

দূর্বলতার কথা বললে পার্শ্ব চরিত্রগুলো ভালোভাবে ফুটে না উঠা। চম্পা, অরুণা বিশ্বাস, মিশা সওদাগর, আরমান পারভেজ মুরাদের মত নামী তারকাদের সেভাবে পাওয়া যায়নি। নায়ক কেন্দ্রিক অ্যাকশন ধারার ছবিতে নায়িকার গুরুত্ব কম থাকবে স্বাভাবিক, কিন্তু নায়িকার নাম যখন পূজা চেরি তখন প্রত্যাশা থাকে বেশি, সেই তুলনায় হতাশ হয়েছি। তবে শেষাংশে সিয়ামের সঙ্গে তার উপস্থিতি মনে জায়গা করে নিয়েছে। তাসকিন আহমেদ ভালো করেছেন বলা যায়, কিন্তু তাকে ঘিরে যে আকর্ষণ রাখতে চেয়েছেন গল্পকার, সেটা জমেনি। তৃতীয় গানটার অপব্যবহার হয়েছে। প্রথমাংশের চিত্রনাট্য আরো ভালো দাবী করে, যদিও দ্বিতীয়ার্ধ সেটা পুষিয়ে দিয়েছে।

‘থেমে যাওয়া মানেই শেষ নয়’ সিনেমার শেষপ্রান্তে সিয়ামকে উদ্দেশ্য করে মিশা সওদাগরের মুখে এই সংলাপ টা খুব ভালো লেগেছে। ‘শান’ টিমের যে সর্বাত্মক চেষ্টা, সেটা যেন শেষ না হয়, আরো প্রস্তুতি নিয়ে পরবর্তী সিনেমাগুলো দর্শকদের সামনে নিয়ে আসবেন। এই প্রত্যাশা।

আরও পড়ুনঃ-

Doctor Strange in the Multiverse of Madness

The Batman

Fantastic Beasts: The Secrets of Dumbledore

মন্তব্য করুন