
ইদানীং অদ্ভুত কি সব যেন হচ্ছে আমার সাথে আর ইমেজিনেশন টাও খুব বেশি কাজ করছে। সিগারেট ও আর বাকি করে আনতে পারছিনা। যদি খুঁজি তাহলে টং এর মামা দিবেন বটে, কিন্তু এভাবে রোজ বাকি করে খাওয়া টাও কেমন যেন। বৃষ্টি টাও থামছে না। ব্যালকনি তে বের হয়ে দেখি সেই মেয়েটি। সেদিন খুব ভেবাচেকা খেয়ে গিয়েছিলাম, সেদিন বাসায় ঢুকতেই মনে হচ্ছিল মনের ভ্রম। মুহুর্তের জন্য সব কেমন যেন বিষ্ময়কর লাগছিলো।
যে মেয়েটিকে আমি তার বাসার নিচ থেকে দেখেছিলাম সে মেয়েটি দেখলাম আমার বাসায়, তাও মায়ের সাথে কথা বলছিল। ভাবছিলাম মেয়েটি আমার বাসায় কি করছে! কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। ভাবছিলাম মেয়েটি কেন এলো, সব মিলে ব্যাপার টা কেমন যেন। আমি দাঁড়িয়ে ই রইলাম। মেয়েটি আমার দিকে দেখে মুচকি হাসলো। খুব কথা বলতে ইচ্ছে করছিলো। ইচ্ছে করছিলো গিয়ে নামটা জিজ্ঞেস করি। কিন্তু আর জিজ্ঞেস করা হলো না, হলো না কোনো কথা। আমি আমার রুমে চলে গিয়েছিলাম। পরে অবশ্য মেয়েটির নাম জানতে পারলাম তাও মায়ের মুখ থেকে হঠাৎ কি যেন বলতে গিয়ে।
অনিকের গল্প পর্ব-১ পড়ুন এখানে
পড়ুন আমাদের নতুন প্রেমের গল্প প্রথম প্রেম শেষ ভালোবাসা
মেয়েটি এসেছিলো কোনো এক কাজে মায়ের কাছে। মেয়েটি এবার এস এস সি দিয়েছে। মা মেয়েটির মা বাবাকে চিনেন, পরিচিত কিসব বলছিলেন। কিন্তু আমি মায়ের কোনো কথায় খেয়ালই করিনি! কিন্তু হঠাৎ মা বলে উঠলেন মেয়েটির নাম টা মেয়েটির মত মিষ্টি। তখন আমি হাল্কা মুচকি হাসলাম। কিন্তু জিজ্ঞেস করার আগেই মা বলে দিলো। নাম টাও ছিল মেয়েটির মতই….. “মিহিমা”। অদ্ভুত নাম “মিহিমা”। আচ্ছা নাম টার অর্থ কি হতে পারে। আহা আবারো কি হাবিযাবি ভাবছি।
সিগারেট ও খেতে পারছি না মাথা টা খুব ধরে আছে। খুব ভালোই অভ্যাস হল। যেখানে দিনে ৪/৫ টা সিগারেট খাওয়া হত এখন একটা ও খাওয়া হই নি। টাকাও নেই পকেটে। মায়ের কাছে চাইলেও হাজার প্রশ্ন করবেন। আর বাবার কাছে চাইতেও পারব না। অনেক দিন বাইরে রাস্তায় হাটি না। আগে কলেজে না গিয়ে অর্ধেক সময় রাস্তায় হাঁটতাম, সঙ্গে অবশ্য সিগারেট থাকতো। বাসায় জানতো আমি কলেজে গিয়েছি। সবাই বন্ধুদের সাথে থাকে। কিন্তু কলেজেও কারো সাথে তেমন একটা কথা বলতাম না। নিজের মত থাকতাম। বাইরে থাকা হত বেশি। কিন্তু এখন বাইরেও কম যাওয়া হয়। ঘরে কেমন যেন দম বন্ধ হয়ে আসছে, একটু বাইরে যাওয়া দরকার। রুমের বাইরে মা কি যেন করছেন।
– অনিক, কোথায় যাচ্ছিস?
– মা হঠাৎ ডাক দিলেন, নিশ্চয় কোনো কাজ দিবেন।
– কোথাও না, একটু বাইরের দিকে যাচ্ছি।
– আচ্ছা ঠিকাছে। কিন্তু শুন ঘরে সিলিন্ডার টা নষ্ট হয়ে গেছে, একটা সিলিন্ডার এর ব্যবস্থা করিস।
– কিন্তু আমি সিলিন্ডার কই পাবো?
– ঠিকাছে লাগবে না, আমি ব্যবস্থা করবো, তুই যা।
– না ঠিকাছে আমি দেখছি, আমি এনে দিবো।
– ঠিকাছে যা। তাড়াতাড়ি নিয়ে আসিস কিন্তু।
– আমি কানে না নিয়ে বেরিয়ে গেলাম।
ফলো করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল
আহ একটু রোদ উঠল। মামার দোকানে গিয়ে, আবারো সিগারেট নিলাম বাকি করে। এই নিয়ে মনে হয় অনেক বার নিয়েছি। কিন্তু মামাও দেখি টাকা খুঁজে না। হয়ত বেশি হয়ে গেলে তখন আর ছাড় পাবো না। বাহ! ভালোই লাগছে! মাথা টাও হাল্কা লাগছে। হেটে সেই বাসার নিচে গিয়ে দাঁড়ালাম। কিন্তু কেন দাঁড়িয়েছি তাও জানি না। মেয়েটি নেই, হয়ত বৃষ্টি নেই তাই মেয়েটিও নেই। কেমন যেন লাগছিলো, মনে হচ্ছে বৃষ্টি থাকলে ভালো হত। হঠাৎ মনে হল কেন আমি এখানে দাঁড়িয়ে আছি। আবার হাঁটা শুরু করলাম। চারদিকে মিষ্টি রোদ, ঠাণ্ডা পরিবেশ।
আবার কেন যেন দাঁড়িয়ে গেলাম। পেছনে ফিরে তাকিয়ে দেখি সেই মেয়েটি মিহিমা। আবার সেদিকে হাঁটা শুরু করলাম। এবার দেখি তাদের বাসার দারোয়ান আমার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছে যেন আমি কি না কি করে ফেলেছি ! আমি একটু দূরে গিয়ে দাঁড়ালাম। রোজ এদিকে এসে দাঁড়িয়ে থাকাটা যেন অভ্যাস হয়ে গেছে! তাই তো দারোয়ান টাও চিনে ফেলেছে। আজ মিহিমা একা নয়, সঙ্গে একটা ছোট্ট ছেলেও ছিলো, হয়ত মিহিমার ভাই। মিহিমা তার ভাইকে নিয়ে দাঁড়িয়েছিল। মিহিমা তাকালো, সে আবার হাসছে আমাকে দেখে। এবার আমিও হাসলাম। কিন্তু কেন হাসছি তাও জানিনা। হঠাৎ তার ছোট্ট ভাই তাকে টেনে নিয়ে চলে গেলো। আর মিহিমা আমার দিকে তাকিয়েই ছিলো।
আমার হঠাৎ মাথায় এলো আমি এখানো কেন দাঁড়িয়ে আছি। আবার হাঁটা শুরু করলাম! ব্যস্ত রাস্তায় গাড়ি চলছে। হঠাৎ মনে হল কেউ একজন আমার নাম ধরে ডাকছে, পেছনে তাকিয়ে দেখলাম কেউ নেই। কি অদ্ভুত! আরেহ আমার চোখে সেই হাসি ভাসছে। সেই দুষ্টু মিষ্টি হাসি। মিহিমা! এত সুন্দর করে কিভাবে হাসে। হঠাৎ কেমন যেন বুকের বাম পাশ টা একটু ব্যাথা করে উঠলো, ঠিক ব্যাথা না, কেমন যেন চাঞ্চল্যতা প্রকাশ হচ্ছে। মনে হল মিহিমা আমার সামনে। হঠাৎ করে কিসের একটা জোরে শব্দ হল ! আর কিছুই শুনতে পাচ্ছিলাম না। মনে হচ্ছে কি যেন ধাক্কা দিল, কেমন যেন মাথাটা ভারি হয়ে আসছে। চোখ বন্ধ হয়ে আসছে, আর খোলা রাখতে পারছি না।
the story is getting better and better
sharminorshi280@gmail.com
[…] By স্টাফ রিপোর্টার কল্পকাহিনি […]
[…] অনিকের গল্প পর্ব ২ পড়ুন এখানে […]
[…] অনিকের গল্প পর্ব ২ পড়ুন এখানে […]