সে ছোটবেলা থেকে মা ছিল না আমার, বাবা ছাড়া সত্যিকার অর্থেই কারো ভালবাসা পেয়েছি মনে করতে পারিনা। প্রিয় বন্ধুর মৃত্যু আমাকে নাড়িয়ে দিয়েছিল খুব। বাবার অসহায় অতীত আর আমার মায়ের অন্তর্ধানের রহস্যের জট আরো পাকিয়ে যেতে না যেতেই, আমার খুব কাছের ফারিয়ার আত্মহননের চেষ্টা আমাকে বিহবল করে দিচ্ছিল।
হাসপাতালে পৌঁছে, অবাক হলাম আমাদের কয়জন অফিস কলিগ ছাড়া ফারিয়ার বাসা থেকে কেউ নেই, জানলাম ওর বাবা হাসপাতালে ভর্তি করেই চলে গেছে। বুঝলাম সম্ভবত বাসার সাথে ঝামেলা। এখন ফারিয়ার জ্ঞান ফেরা পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া আমার উপায় নেই। আমি ডাক্তারের সাথে কথা বলে এক ভয়াবহ তথ্য আবিষ্কার করলাম।
‘ফারিয়া প্রেগন্যান্ট’
আচমকা আমার মুখ থেকে বেরিয়ে এলো- কী!! সত্যি!
ডাক্তার বললেন হ্যাঁ- আর এই জন্যই উনার কেইস টা আমরা খুব সেন্সিটিভ ভাবে হ্যান্ডেল করছি। যদিও কমপ্লিকেশান খুব একটা নেই। কিন্তু উনার কোন গার্জিয়ান বা এটেন্ডেন্ট ছাড়া আমরা অনেক ডিসিশানই নিতে পারিনা। আমি কিচ্ছু চিন্তা না করেই বললাম, ‘আপনি আমার কাছ থেকে ডিসিশান নিতে পারেন, আমি ওর লোকাল গার্জিয়ান । বাট আপনি একটা জিনিস নিশ্চিত করেন যে, কোন রকম থানা পুলিশ বা মিডিয়ার জানাজানি যেন না হয়’।
উনি আমাকে নিশ্চিন্ত করলেন, আমি তবুও আমাদের অফিসের দায়িত্বশীল একজন কে ডেকে ব্যাপার গুলো নিশ্চিত করার চেষ্টা করলাম।
এখন শুধু ফারিয়ার জ্ঞান ফেরার প্রতীক্ষা যদিও আমি ঘটনাটা মোটামুটি আন্দাজ করে ফেলেছি আর তাই ফারিয়ার বাবা মায়ের সাথে কথা বলার সিদ্ধান্ত টাও আমি নিলাম তবে তার আগে আমার ফারিয়ার সাথে কথা বলতে হবে।
সকালে ফারিয়ার যখন জ্ঞান আসলো, নার্স এসে আমাকে ডেকে নিয়ে গেল। ফারিয়া কে দেখে আমার এত রাগ আর দুঃখ লাগলো আমি কিছু না ভেবে ওর কাছে গিয়ে ধমকে উঠলাম- ফারিয়া ছিঃ! তুমি এটা কী করতে গিয়েছিল!! তোমার নিজের জীবনের সাথে এখন অন্য একটা জীবন ও যে জড়িয়ে গেছে!!
‘অয়ন ভাইয়া, আমি এই গ্লানির জীবন রাখতে চাইনি, চন্দনের সাথে কিছুতেই যোগাযোগ করতে পারিনি, এর মাঝে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ায় ডাক্তার দেখাতে গিয়ে আম্মু জেনে যায় আমি প্রেগন্যান্ট। আব্বু খুব কষ্ট পেয়েছে, আমি সুইসাইড না করলে হয়তো আব্বুই সুইসাইড করতে চাইতো, আমি কী করতে পারতাম!!’ ডুকরে কেঁদে উঠলো ফারিয়া। ‘ অয়ন ভাইয়া, আব্বু বারেবার জানতে চাইছিল আমার প্রেমিকের ব্যাপারে, যেখানে আমি চন্দনের সাথে যোগাযোগ ই করতে পারছিনা, কিভাবে নাম বলি। তারপরো আমার এক ফ্রেন্ড কে দিয়ে চন্দনের বাসায় পাঠিয়ে জানলাম, ওরা স্বপরিবারে ইন্ডিয়া চলে গেছে, এই সন্তান তার পিতৃ পরিচয় ছাড়া কিভাবে বড় হবে?? আর সময় ও পার হয়ে গেছে যে টারমিনেট করার কোন উপায় নেই’ ‘ভাইয়া দুঃখে, রাগ, আব্বু-আম্মুর কথা ভেবে আমি সুইসাইড করতে চেয়েছিলাম’
‘ফারিয়া, আমাকে একটাবার বলতে পারতে, আমি না হয় চন্দনকে খুঁজে বের করার ট্রাই করতাম’।
‘ ভাইয়া, যে লোক টা আমার সাথে যোগাযোগ করবেনা বলে পালালো, সে কী আমার সন্তানের দায়িত্ব নিবে’?
আমি কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বললাম- ‘তাহলে এখন তুমি কি করতে চাও’
দু’হাতে মুখ ঢেকে ফেলল ফারিয়া- আমি জানিনা
দীর্ঘশ্বাস ফেলে সারারাত ধরে করা আমার প্ল্যান টা ওকে বলব ভাবলাম, তাতে অবশ্য সব কূল ই খুব ভালভাবে রক্ষা পাবে। স্রষ্ঠা আসলে ফারিয়ার সমস্যাটার মাধ্যমে হয়তো আমার অনেক গুলো সমস্যা সমাধানে ব্যাবস্থা করে দিয়েছেন, তবে তার আগে আমাকে আগে ফারিয়াকে কনভিন্স করতে হবে।
আমি ফারিয়ার কেবিনে দরজা লাগালাম, ফারিয়া জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালো, আমি ওকে ইশারায় চুপ করতে বললাম। কাছে গেলাম আমি। গাড় গলায় বললাম- ফারিয়া আমাকে তোমার কেমন লাগে?
ফারিয়া বলল- ভাল, আপনি তো খুব চমৎকার একজন মানুষ।
‘আচ্ছা ফারিয়া, তুমি যদি জানো আমি খুব অন্যরকম একজন মানুষ, মানে যার অনেক বড় একটা স্পেশিয়েলিটি আছে, যেটাকে মানুষ আমার ক্ষুদ্রতা ভাবে’
ভ্রু কুচকে তাকালো ফারিয়া- আমি বুঝতে পারছিনা ভাইয়া
দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললাম আমি- ফারিয়া আমি যদি তোমার সন্তানের দায়িত্ব নিতে চাই, মানে যদি ওকে আমার সন্তান রূপে আমি স্বীকৃত দেই, কিন্তু ধরো যদি জানো আমি কখনোই তোমার স্বামী হতে পারবো না, তবে কি আমাকে তুমি এই সুযোগটা দিবে’?
ফারিয়ার হত বিহবল দৃষ্টি- আমি আসলেই কিছু বুঝতে পারছিনা, আপনি আমাকে বিয়ে করতে চাচ্ছেন না, বেবিটা কে এডপ্ট করতে চাচ্ছেন, আমাকে করুনা করতে চাচ্ছেন”?
‘ না, না তুমি ভুল বুঝছ, আসলে মানে ফারিয়া একটা সিক্রেট তোমাকে আজ আমি বলছি, এই সিক্রেট টা আমি আর বাবা ছাড়া হয়ত আমার মা জানেন, তুমি সিদ্ধান্ত যা-ই নাও না কেন, আমার সিক্রেট টা সিক্রেট ই রাখবে প্লিজ’।
আমি থেমে বলতে লাগলাম- ফারিয়া, আমি আসলে একজন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ।
ফারিয়ার চোখে তখন রাজ্যের বিস্ময়। আমি হেসে বললাম-‘‘ফারিয়া, বাবা আমাকে জন্মের পর থেকে একজন পুরুষ হিসাবে বড় করার অনেক চেষ্টা করেছে, প্রথম প্রথম আমি বিদ্রোহী হবার চেষ্টা করেছি, পরে মেনে নিয়েছি। তুমি চাইলে আমি তোমার পাশে থাকতে পারি একজন বন্ধু হিসাবে, একজন সুহৃদ হিসাবে’’ ‘তবে হ্যাঁ, আমি খুব ভালো বাবা হবো তুমি দেখো’- হেসে বললাম আমি। তুমি রাজি থাকলে তোমার বাবা মা কে বলে সব দায় স্বীকার করে নিব আমি’’। ‘‘ভেবে দেখো, সব কূল ই রক্ষা পাবে, ও আর আমার স্বার্থ হলো, বাবা খুব খুশি হবে, তার প্রতিষ্ঠিত মিথ্যা আমি বাস্তবায়ন করছি দেখে’’ তারপর ও তুমি মুক্ত, তুমি চাইলে তোমার সন্তান আমার কাছে রেখে যে কোন সময় চলে যেতেও পারো…’’
ফারিয়া বলল- আমাকে দয়া দেখাচ্ছেন আপনি, আমার পরিবার কে লজ্জার হাত থেকে বাঁচিয়ে?
‘আমি তোমাকে আর কত ভাবে বোঝাবো, দেখ এটা হলে তোমার এবং আমার দুইজনের সমস্যার ই সমাধান হয়। তুমি ভাবতে সময় নিতে পারো” বলে বেরিয়ে যাচ্ছিলাম আমি, পেছন থেকে ডাকলো ফারিয়া, অয়ন ভাইয়া শুনুন, আপনার ফোন টা একটু দিবেন প্লিজ’, আমি এগিয়ে দিলাম, ফারিয়া কোন একটা নাম্বারে ডায়াল করে আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল- ‘ নিন, বাবার সাথে কথা বলুন, বাবাকে নিশ্চিন্ত করুন, আমাকেও’ বলে হাসলো।
ফারিয়ার বাবাকে বোঝানো সহজ হলো না, উনি আমাকে কিছুটা চতুর স্বার্থানেষী অফিসের বস হিসাবে ধরে নিয়ে কথা বলছিলেন, পরবর্তীতে বিয়ের প্রস্তাবে খুশি হলেন। দুই একদিনের মধ্যেই বাবার সাথে কথা বলিয়ে দিব এই শর্তে উনি ফারিয়াকে নিতে হাসপাতালে আসতে রাজি হলেন। বাবাকে জানাতে আমার বিন্দুমাত্র দ্বিধা হলো না, বেশ হাসিমুখে নিজের বিয়ের কথা বললাম আমি। ফারিয়াকে বাবার খুব পছন্দ, তাই বাবাও খুব খুশি হলেন। হাসেম মামা ও খুশি হলেন। আমি অবশ্য বাবাকে একটা কঠিন সিদ্ধান্তে ফেলে দিলাম- বাবা, আমি তোমার সব ইচ্ছা পূরণ করতে যাচ্ছি, বিয়ে করবো , সংসার ও করবো। কিন্তু আমি চাই না আমার আর আমার স্ত্রীর জীবনে কোন অন্ধকার ছায়া থাকুক। আমি চাই তুমি সাব্বির আর তার মা, প্রয়োজন হলে হাসেম মামা সহ এই বাসা থেকে চলে যেতে বলবে, আর তা অবশ্যই আমার বিয়ের অনুষ্ঠানের আগেই, অথবা আমি এই বাড়ী ছেড়ে চলে যাবো আমার স্ত্রীকে নিয়ে। অবশ্য এই বাড়ী টা তো আমার নামেই, তাই না? বলেই ক্রুড় হাসি ছুড়ে দিলাম বাবার দিকে। আর এক মিনিট ও আমি দাঁড়ালাম না বাবার সামনে। জানিনা কেন ইদানীং সাব্বিরকেও আমার অতিরিক্ত বিরক্ত লাগে, সে এখন অনেক সুস্থ। ওর সাথে দেখা হলেই কেন জানি আমার খুব ঘৃণা অনুভব হয়।
ফারিয়ার বাবার সাথে বাবা কথা বলে আমাদের বিয়ের ব্যাবস্থা করলো, এর মাঝে ফারিয়ার সাথে আমার ওভার ফোন কথা হতো, সে এখনো ট্রমা কাটিয়ে উঠতে পারেনি, আমাকে এখনো অয়ন ভাইয়া আর আপনি করে বলছে। ওর শরীর ও ভাল না, তাই পরের মাসের প্রথম শুক্রবার আমাদের বিয়ের রিসিপশানের আয়োজনের কথা ঠিক হলো। বিয়ের কথা পাকাপাকি হবার পরপরি আমি আমাদের ফ্ল্যাট টা রেনোভেশানের কাজ হাত দিলাম, ঠিক আমার মন মতো করে, রেনোভেশানে সুবিধা হবে বলে হাসেম মামাকে কয়েকদিন আমাদের ফ্ল্যাটে আসতে না করলাম, আর আমি ইদানিং বাবার রুমেই বেডিং পেতে ঘুমাচ্ছি, বাবাকে বলেছি- বউ আসলে তো আর বাবাকে বেশি সময় দিতে পারবো না। বাবা ও আমার বিয়ে নিয়ে চরম ব্যাস্ত, সারাদিন ই নানান পরিকল্পনা করেন ফারিয়ার বাবা- মায়ের সাথে, রাতে ক্লান্ত বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে আমার খুব মায়া হয়, দীর্ঘশ্বাস ফেলি আমি।
এক সকালে আমি অফিসে যাওয়ার জন্য বের হচ্ছিলাম, গেটের সামনে রেহানা আন্টি আমার সামনে এসে দাড়ালেন-‘তুমি কী ভেবেছ, আমাকে বাড়ী থেকে দূর করলেই, তোমার বাবা ভাল থাকবে? আমি ওর যে যত্ন করি সেটা কী আর কাজের লোক দিয়ে হবে? তাছাড়া আমি ওর বিবাহিতা স্ত্রী। ওর উপর আমার অসীম অধিকার, আমি ওকে সঙ্গে নিয়ে যাবো’ খুব কাটা কাটা ভাবে বললেন রেহানা আন্টি, আগে হলে আমি এই ধরনের কথায় ভড়কে যেতাম, কিন্তু এখন আমি অনেক পোড় খাওয়া এক শক্ত মানুষ। আমি হাসতে হাসতে বললাম ‘শোনেন আন্টি, বাবাকে যদি আপনি আমার কাছ থেকে আলাদা করতে পারতেন তাহলে অবশ্যই করতেন, আপনার সব চাল এখন আমার কাছে স্পষ্ট। আপনি এক হীন ষড়যন্ত্র করেছেন আমার বাবা আর আমার সাথে, সেটা আমার বাবা না বুঝুক, আমি ঠিকই বুঝেছি। আমি চাইনা বাবাকে সেটা বুঝিয়ে কষ্ট দিতে। শোনেন, আমার মা কে খুব নিষ্ঠুর একটা ষড়যন্ত্র করে আপনি এই বাসা থেকে বের করেছেন, সেটা আমি এখন জানি, আপনাকে এই বাসা থেকে সরতে বলেছি সেটা আপনার মঙ্গলের জন্যই, আপনাদের জন্য আমি কিছু টাকার ব্যাবস্থা রেখেছি, আপনার ছেলেকে আপনি চাইলে আমি দেশের বাইরে পাঠানোর ব্যাবস্থা করতে পারি, কিংবা ব্যাবসার জন্য ও দিতে পারি, তবে সেটাই শেষ, এরপর আপনাদের কোন নোংরা ছায়া আমি এই বাড়ীতে তো দূরে থাক আমার বাবার জীবনেও দেখতে চাই না। ও আর হ্যাঁ, আমার বাবার খেয়াল আমি আর আমার স্ত্রী খুব ভাল রাখব”।
তুমি কী সাব্বির কে তার জন্মদাতার কাছ থেকে আলাদা করতে চাও? রেহানা আন্টি রাগ দেখিয়ে বললেন। আমি এবার অট্টহাসি দিয়ে বললাম- ‘আন্টি, আমার বাবা আপনার সন্তানের জন্মদাতা নন সে আপনি খুব ভাল করেই জানেন, এতদিনের সব ব্ল্যাকমেইলিং শেষ হবার সময় শেষ। আমার কাছে এটার প্রমাণ আছে আন্টি, আবারো বলছি আমার ধৈর্য্যের বাঁধ ভাংবেন না, আজ সন্ধ্যায় ফিরে যেন আমি আপনাকে এই বাসায় আর না দেখি। ও হ্যাঁ সাব্বির আর কনার বিয়ে আমি ঘটা করে দেয়ার ব্যাবস্থা ও করেছি, আমি কিন্তু আমার বাবার সন্তান, ঠিক তার মত ই উদার। সাব্বিরের বিয়েতে অবশ্যই আমি আসবো’ বলে হাসতে হাসতে আমি বের হয়ে গেলাম।
রেহানা আন্টি এখন দৌড়ে আমাদের ফ্ল্যাটে যাবে কিন্তু গিয়েই একটা বড়সড় ধাক্কা খাবে, কারন আমাদের ফ্ল্যাটটা লক করা, বাবাকে উনি আর খুঁজে পাবেন না, আমি পেতে দিব না। আমি আর আমার বাবা এতদিন শুধু একটা খেলার পার্ট হয়েছিলাম, এখন এই খেলার মূল খেলোয়াড় ই হবো আমি। সেদিন সন্ধ্যায় আমার লোক হাসেম মামা, রেহানা আন্টিকে দিয়ে আসলো তাদের জন্য আমার ঠিক করা নতুন বাসায়। আর সাব্বিরকে আমি ডেকে নিয়ে স্বপ্ন দেখালাম বউ সহ ইউরোপ চলে যাবার। আমার সব কথা ই সে মানবে, মায়ের প্রতি অসীম ঘৃণা টা আমার কাজে লেগেছে। কনা রাজি হয়ে যাওয়ায় আমি সাব্বিরের বিয়ের বিশাল আয়োজনের ব্যাবস্থা করে রাখলাম, আর বিয়ের আগ পর্যন্ত সাব্বিরকে রাখলাম আমাদের কোম্পানির এক অফিসের এক্সট্রা রুমে, বলে দিলাম বাবা- মায়ের সাথে খুব একটা যোগাযোগের প্রয়োজন নেই, বরং বিয়ের আগে ওকে আর কনাকে কনার কাজিন ইশিতা সহ শপিং এ পাঠিয়ে দিব ইন্ডিয়াতে শপিং এর জন্য। আর হানিমুনে যাবে মালদ্বীপ। স্বপ্ন রাজ্যে ভাসছে এখন সাব্বির। এখন সাব্বির আমার হাতের পুতুল মাত্র।
আমার বিয়ের দিন খুব দ্রুত ঘনিয়ে আসতে লাগলো। সবাই বেশ খুশি। আর আমি আমার মা কে খুঁজে চলেছি নিরবে, নিভৃতে। আমার মনের একটা গোপন বাসনা, আমার বিয়েতে যদি মা আসতেন!!
обработка от короеда dezstation
Tegs: уничтожение борщевика https://dezstation.com/
уничтожение плесени dezstation.com
анализ воды dezstation.com
анализ почвы dezstation.com
https://www.skyrevery.ru/airplanes/airbus-acj319/ – Частный самолет Airbus ACJ 319 – SkyRevery – подробнее на нашем сайте https://skyrevery.ru – skyrevery.ru
https://skyrevery.ru/ – Аренда частного самолета с экипажем в компании SkyRevery – это выбор тех, кто ценит свое время и живет по своему расписанию!
Аренда частного самолета помогает экономить самый важный ресурс – время. Арендовав частный самолет, именно Вы решаете, когда и куда полетите. Для выполнения чартерных рейсов мы предлагаем частные самолеты иностранного производства, гарантирующие высокий уровень комфорта и безопасности полета. Внимательные бортпроводники и высокопрофессиональные пилоты сделают Ваш полет максимально приятным и удобным.
Когда Вам нужна https://skyrevery.ru/ – аренда самолета срочно, мы можем организовать для Вас вылет по готовности от 3 часов с момента подтверждения.