প্রথম প্রেম শেষ ভালবাসা (পর্ব ১)

ZZgQOQpIWdPUbgwNQwQ1ZGlC7bJIuWDMJq4ME22hgtFQiiU2l_FfFmhWIb+OqzFP6E7yZlEy8GK+FTEHZZApwsweKIHuByT7SQ+i39Osva7yQuvQJlM1VRPVTtZVF79Mc3CvC_WbEdawPG9Lrpw_D94jXk2Vk6GJGrmWEGoDvxXEAiIFmJzTE copy

লিখেছেনঃ এন.এন.নিঝুম

বত্রিশ বছরে এসে জীবনে কোন মেয়ের প্রেমে পড়লাম। প্রথম প্রেম। খুব অদ্ভূত শোনালেও কথাটা খুব সত্যি। আমি অয়ন মাহমুদ, পেশায় ব্যাবসায়ী । গড় পড়তা বাঙ্গালী ছেলেদের তুলনায় আমি লম্বা এবং সুদর্শন। ব্যাবসায়ী হওয়াটা আমার চয়েস ছিল না, হতেই হতো কেননা ব্যাবসায়ী বাবার একমাত্র সন্তান আমি। আমার প্রিয় বিষয় কোয়ান্টাম ফিজিক্স। আমার বিয়ে বাবার ইচ্ছেতেই, তার নির্ধারিত পাত্রীর সাথে। স্ত্রীর সাথে আমার সম্পর্ক?? ‘ভাল’। সুখী দাম্পত্য জীবন আমাদের। আমার স্ত্রী আমাকে ভালবাসেন বলেই বাবার ধারনা ছিল। আমার?? সে গল্পে আসছি ……………

আমার জন্মের সময় মারা যান আমার মা বলে আমি শুনেছি , আমার বিরাট ব্যাবসায়ী বাবা আর কখনোই বিয়ে করেন নি। বলা যায়, বিয়ের সময় পান নাই। তার গার্মেন্টস এর ব্যাবসা, ভীষন ব্যাস্ততা। তার ফাকের সবটা সময় আমার জন্য নির্ধারিত। এমন ও হয়েছে, বাবার ফিরতে লেইট নাইট হবে বলে স্কুল শেষে বাবা আমাকে সোজা অফিসে নিয়ে গেছেন, বাবার অফিসে আমার একটা পারসোনাল রুম ছিল, যেটা আমার জন্য ছিল স্টাডি কাম বেডরুম। বাবার ব্যাস্ততার ফাঁকে তিনি আমার জন্য সর্বোচ্চ কেয়ারের ব্যাবস্থা করেছিলেন। আমার জন্য একজন কেয়ারটেকার রাখা ছিল, যাকে আমি ডাকতাম হাসেম মামা। বাবা আর হাসেম মামাকে নিয়েই আমার শৈশব। স্কুলে আনা নেয়া আমার খাওয়ানো সবই করতো হাসেম মামা। হাসেম মামার ফ্যামিলী আমাদের বিল্ডিং এর নিচ তলাতেই থাকতো, উনার একটা ছেলে ছিল আমার সমবয়সী। বাবা কোন কারনে চাইতেন না, আমি হাসেম মামার ছেলে সাব্বিরের সাথে খেলি। আমার খুব ইচ্ছা করতো সাব্বিরের সাথে খেলি, আমাকে ছাদে দেখলে সাব্বিরের মা কেন জানি সাব্বিরকে ডেকে নিয়ে যেত, সাব্বির যেতে না চাইলে এমনকি জোর করে মেরেও নিয়ে যেত। আমি হাসেম মামাকে এই ব্যপারে জিজ্ঞেস করলেও সে সবসময় চুপ থাকতো। আমি হাসেম মামাকে, মামা ডাকলেও উনি বাবার নির্দেশে আমাকে ছোট স্যার ই ডাকতেন। হাসেম মামা ফ্যামিলি সহ আমাদের বিল্ডিং এ থাকলেও রাতে তিনি আমার পাশের রুমেই ঘুমাতেন, আমি কোন রাতেই তাকে বাসায় যেতে দেখিনি। হাসেম মামার স্ত্রী কখনোই আমার সাথে কথা বলেন নি। বাবার নির্দেশেই উনি কথা বলতেন না বলে আমার ধারনা।

বাবা চাইতেন আমি খুব বাস্তববাদী মানুষ হই, কিন্তু উনি নিজের তৈরি দুনিয়াতে আমাকে উনার ছাঁচে বড় করছিলেন। এমনকি আমার স্কুলের বন্ধু বান্ধবদের ব্যাপারেও উনার খুব খুঁতখুঁতানি ছিল। আমার সাথে কারো ফ্রেন্ডশিপ হয়েছে বা আমি কয়েকদিন নির্দিষ্ট কারো সাথে বসেছি বা কথা বলেছি শুনলে উনি সেই ছেলে বা মেয়ের ফ্যামিলির ব্যাপারে খোঁজ নিতেন, তাদের মোটামুটি ইন্টারভিউ করে নির্ধারন করতেন আমি তাদের সাথে মিশবো কিনা। বাবার মধ্যবিত্তদের প্রতি অপরিসীম ক্ষোভ ছিল, যার কোন কারন আমি বুঝতাম না। যেহেতু আমি বেশ দামী একটা স্কুলে পড়তাম, খুব কমই মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে মেয়ে আমাদের স্কুলে পড়তে আসতো, তবুও বাবার নিজস্ব পরীক্ষা পদ্ধতিতে পাশ করেই আমার বন্ধু হতে হতো।

ও আরেকটি ব্যাপার বলা হয় নি, আমার মায়ের পরিবারের কারো সাথে আমার যোগাযোগ ছিল না। বাবাকে জিজ্ঞেস করলে বাবা বলতেন, তাদেরকে তোমার দরকার নেই। আমি অনেক জোরাজুরি করে হাসেম মামার কাছ থেকে জেনেছি আমার নানা নানী আর এক খালা আছেন। কিন্তু তারা কোথায় আছে তা তিনি জানেন না, যদিও আমার ধারনা তিনি তা জানেন। আমার মায়ের এক মাত্র ছবি আমাদের বাসার দেয়ালে টাঙ্গানো আছে, যেটা বাবা নিজেই পোট্রেট করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে। আমার বাবা চারুকলার ছাত্র ছিলেন, খুব সুন্দর ছবি আকতেন বাবা। আমি আসলে আমার বাবা- মায়ের ব্যাপারে খুব একটা কিছু জানিনা। তারপর ও কল্পনা করে নিতে ইচ্ছা করে, আমার বাবা- মায়ে খুব প্রেম ছিল, মায়ের স্মৃতি ভুলতে পারেনি বলেই বাবা আর বিয়ে করেন নি। আমাকে খুব বেশি ভালবাসতেন আমার স্বল্পভাষী বাবা। আমি আর বাবা বছরে একবার দেশের বাইরে ট্যুরে যেতাম। ঐ সাতদিন বাবা খুব বদলে যেতেন, রংচঙ্গা শার্ট পড়ে বাবা আর আমি খুব ঘুরতাম ছেলে মানুষের মত, অনেক অনেক সুখস্মৃতি নিয়ে আমরা দুইজন ফিরতাম। এসেই আমার বাবা আবার গম্ভীর হয়ে যেতেন, তখন বড্ড এক ঘেয়ে লাগতো আমার, মনে হতো এই বাবাকে আমি চিনিনা। আমি সারা বছর অপেক্ষা করতাম ঐ সাতদিনের জন্য। আমার খুব ইচ্ছা ছিল এ লেভেল শেষ করে দেশের বাইরে পড়তে যাবার। আমার বেশিরভাগ বন্ধুরাও বিভিন্ন দেশে পড়তে চলে গেলো। বাবা হয়ত চাননি আমি তার কাছ ছাড়া হই, আর তাই, আমি বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে ভর্তি হলাম ঢাকা বিশবিদ্যালয়ে। আমার বাবার সব ডিসিশানই ছিল অদ্ভুত, কৈশোর পর্যন্ত আমাকে নিয়ন্ত্রিত জীবনের মাঝে রেখে হঠাৎ ই আমাকে ভর্তি করে দিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে এসে নানান ধরনের সামাজিক প্রেক্ষাপট থেকে আসা ছেলে মেয়েদের মধ্যে আমি কেমন যেন নিজেকে এলিয়েন বোধ করতে লাগলাম। ফার্স্ট ইয়ারে ক্যাম্পাসে যাওয়ার কথা মনে হলেও আমার খুব অসহায় লাগত। কেন যেন ফার্স্ট ইয়ার শেষেও আমার কোন বন্ধু হলো না, কিভাবে যেন ফার্স্ট ইয়ার পরীক্ষা শেষে আমি ক্লাসে ফার্স্ট হয়ে গেলাম। যেদিন রেজাল্ট পাব্লিশ হলো, পুরো ক্লাসের এটেনশান একবারে আমার দিকে। আমি যে ক্লাসে ছিলাম সেই প্রথম যেন সবাই জানলো। আমার খুব লজ্জা লাগতে লাগলো। ক্লাসের টিচার রাও আমাকে ডেকে নিয়ে আলাদা করে কথা বললেন। এরপর আস্তে আস্তে ক্লাসের দুই একজন আমার সাথে কথা বলতে শুরু করলো। আমি বাবার ভয়েই হয়ত কিছুটা প্রাণ খুলে মিশতে পারতাম না। কিন্তু এইবার বাবা আর হাসেম মামা কিংবা অন্য কারো মাধ্যমে আমার বন্ধুদের উপর গোয়েন্দা গিরি করতে পাঠালেন না। কেন পাঠালেন না, সেই রহস্য উদ্ধার করতে আমার কেটে গেলো আমার আরো অনেকগুলো বছর।

বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার জীবনে সত্যিকারের এক বন্ধু হলো আসিফ। আসিফ গ্রাম থেকে আসা এক কৃষকের সন্তান। সে নাকি এমন গ্রাম থেকে এসেছে যেখানে সে-ই প্রথম কলেজ গন্ডি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। প্রায় দুপুরেই দেখতাম আসিফ ঝাল মুড়ী বা ভেল পুরি খাচ্ছে এবং সেটা লাঞ্চ হিসাবে। আজীবন বিত্ত বৈভবের মধ্যে বড় হওয়া আমার কাছে এটা রীতিমতো একটা বড় আবিষ্কার যে আসিফের কাছে আসলে প্রোপারলি লাঞ্চ করার মতো টাকা নাই। ক্যাম্পাসে তখন ১৬ কিংবা ১৮ টাকায় বেশ ভাল লাঞ্চ করা যায়। যদিও প্রায় দিন ই হাসেম মামা আমার জন্য লাঞ্চ দেয়ার চেষ্টা করে, তবুও আমার কেন জানি ডাক্সুর ১৬ টাকার খিচুড়ি বা টি এস স্যার ১৮ টাকা ভাত, মুরগি বা আলু ভর্তার প্যাকেজ লাঞ্চ করতে খুব ভাল লাগতো। আসিফ কে আমি প্রায়ই টানাটানি করতাম লাঞ্চ করানোর জন্য, প্রবল আত্মসম্মান বোধ থাকায় বেশিরভাগ দিন ই সে আমার সাথে লাঞ্চ করতে রাজি হত না। আসিফ খুব সুন্দর বাঁশি বাজাতো। সেকেন্ডে ইয়ারে উঠেও হলে ভাল সিট ম্যানেজ করতে পারলো না আসিফ। অনেক টা বাধ্য হয়েই সে রাজনীতিতে নাম লিখিয়ে সিটে উঠল। আসিফ ছাড়াও আমার আরো কিছু বন্ধু হয়েছিল, কিন্তু আসিফ আমার সব চেয়ে প্রিয়। এত সরল মানুষ কিভাবে হয় আমি খুব অবাক হতাম। সেবার বাবা আমাকে নিয়ে ইউরোপ ট্যুরে যাবে। আমি আসিফ কে বলতেই সে এত অবাক হলো, সে আমাকে বললো দোস্ত ইউরোপ ট্যুর দিতে কত টাকা লাগে রে? আমি তাকে আন্দাজে কমিয়ে কমিয়ে একটা টাকার এমাউন্টের কথা বললাম। আসিফ সবিস্ময়ে মুখ ফুটে বলেই ফেলল- এত টাকা!! এত টাকা থাকলে আমার বোনের বিয়ে হয়ে যেত!!আমি আরো অনেক প্রশ্ন করলাম, কিছুতেই সে এর বেশি আর কথা বাড়ালো না। আমি আসিফের অনেক গল্প ই হাসেম মামাকে বলতাম। হাসিম মামা আমাকে অনেকবার বলেছেন বাবাকে আসিফের কথা বলতে, যেন বাবা তাকে সাহায্য করতে পারে। আমি আসিফকে চিনতাম খুব ভাল আর তাই জানতাম কিছুতেই এবং কোনভাবে ই সে আমার কিংবা কারোর ই সাহায্য নিবেনা। আসিফ দুইটা টিউশানি করতো, টিউশানির টাকায় সে নিজে চলত এবং বাবাকে পাঠাতো। থার্ড ইয়ার পর্যন্ত আমি আসিফে দুইটার বেশি শার্ট দেখিনি, ও হ্যা তার একটা পাঞ্জাবী ও ছিল, সেটা আমি তাকে কে ঈদে গিফট করেছিলাম, কোন ভাল জায়গায় গেলে সে ঐ পাঞ্জাবী পড়েই যেত। ঐ একটি পাঞ্জাবী ই আমি তাকে গিফট করতে পেরেছিলাম। কারন যে ঈদে আমি তার জন্য পাঞ্জাবী কিনেছিলা, সেই ঈদেই সে তার টিইশানির টাকা দিকে আমার জন্য ক্যাটস আই থেকে টি-শার্ট কিনেছিল। আসলে তাকে আমি কিছুই গিফট করতে পারতাম না, কারন তীব্র আত্মসম্মান বোধে সে অবশ্যই আমাকে আমার পছন্দের জিনিস গিফট করতে চাইতো। এমন আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন হাসি-খুশি আসিফ তার এক ছাত্রীর প্রেমে পড়ে গেলো ভয়াবহ ভাবে। ক্লাস নাইনে পড়ুয়া আসিফের ছাত্রী আদ্রিতা ছিল পুলিশের ডি আই জির মেয়ে। টিউশানি টা পেয়েছিল আসিফ তার স্কুলের হেড মাস্টারের রেফারেন্সে। তুখোড় মেধাবী আসিফ কে ডি আই জি সাহেব যতটা না মেয়ের প্রাইভেট টিউটর হিসাবে সম্মান করতো তার চেয়ে অনেক বেশি করুণা করতো দারিদ্রতার জন্য। আসিফ বুঝতো না তা না, কিন্তু তার হেড মাস্টারের রেফারেন্সে পাওয়া বলে কিছুটা সহ্য করে যাচ্ছিল। আসিফ আদ্রিতার প্রেমে পড়লেও আদ্রিতার রেস্পন্সটা ঠিক বোঝা যাচ্ছিল না। আসিফ রোকেয়া হলের সামনে থেকে এক ঝুড়ি কাচের চুড়ি গিফট করে প্রপোজ করেছিল আদ্রিজাকে। আদ্রিজা হ্যা কিংবা না কোনটাই বলেনি। তবে মাঝে মাঝে স্কুল ফাঁকি দিয়ে ক্যাম্পাসে আসতো, আসিফ তাকেই প্রেম বলে ভাবতে শুরু করলো। আমি কোন প্রশ্ন করলেই সে আমাকে এবং নিজেকে বোঝাতো আদ্রিজার বয়স অল্প তাই হয়তো ঐভাবে প্রকাশ করতে পারেনা। লেখার হাত খুব ভাল ছিল আসিফের, আদ্রিজাকে দীর্ঘ সব চিঠি লিখতো সে, যদিও আমি কখনই আদ্রিতাকে কোন চিঠি লিখতে দেখিনাই। আমাদের ফোর্থ ইয়ারের ফাইনাল পরীক্ষার আগে আমার পড়াশোনার ব্যাস্ততা বেড়ে গেলো, আমার রিডিং পার্টনার আসিফ তখন চারটা টিউশানি আর আদ্রিতাকে নিয়ে ডুবে আছে, ক্লাসের পড়া বাদ দিয়ে সে বি সি এসের প্রিপারেশান নিচ্ছিল। আর আমার সাথে বাড়ছিল দূরত্ব। আমাদের ক্লাসের আর জুনিয়র অনেক মেয়েরই ক্রাশ ছিলাম আমি, সে আমি বুঝতাম কিন্তু আমি যে আমার নিজেকে বড় বেশি ভাল জানতাম আর তাই মেয়েদের এড়িয়ে চলাটাই আমার জন্য সব চেয়ে ভাল ছিল।

পরীক্ষার বাকি আর অল্প কয়দিন, আমি পাগলের মত ১৭/১৮ ঘন্টা পড়ছি, আসিফের সাথে দেখা হয় না অনেকদিন। ওর যেহেতু মোবাইল নেই আমি কল করেও খোঁজ খবর নিতে পারিনি, ওর রুম মেট আমাদের ক্লাস মেট জাহিদকে জিজ্ঞেস করে জানলাম আসিফ অনেক রাত্রে হলে ফিরে আর কখন যে বেরিয়ে যায় ঠিক নেই। আমি ভাবলাম পরীক্ষার হলে তো দেখা হবেই। কিন্তু পরীক্ষার আর দুইদিন আগে আসিফ তার হলের রুমে সুইসাইড করে। আমার জীবনের জঘন্যতম একটা দিন সেটা যখন আসিফের লাশ দেখতে আমি হলে যাই আর ওর সেই ভয়ংকর নীল হয়ে যাওয়া চেহারাটা আমার আজো দুঃস্বপ্নের মাঝে ভেসে উঠে। আসিফ তার সুইসাইড নোটে লিখেছিল- আদ্রিতা আমি তোমাকে ভালবেসেছিলাম। আসিফের চিঠি আদ্রিতার হাতে পড়লে আদ্রিতার বাবা ডি আই জি মনসুর সাহেব আদ্রিতার কাছে সব জানতে চান, আদ্রিতা প্রেম ভালবাসা সব অস্বীকার তো করেই, আরো মিথ্যে অভিযোগ করে আসিফ তাকে মোলেস্ট করার চেষ্টাও করতো নিয়মিত। মনসুর সাহেব আসিফ কে ডেকে নিয়ে ভদ্র ভয়াবহ অপমান করে, কেস করার কথা বলে এমনকি তার হেড মাস্টারকে সব জানাবেন বলেন। লজ্জায় অপমানে ঘৃণায় আসিফ সুইসাইড করল আমার প্রিয় বন্ধু আসিফ আর আমি?? ট্রমাতে পড়ে সে বছর আর পরীক্ষাই দিতে পারলাম না। বাবা আমাকে অনেক সাইক্রিয়াটিস্ট দেখালেন, দেশের বাইরে নিয়ে গেলেন তবুও আমি আগের মত আর নরমাল হতে পারলাম না। অনেক কষ্টে কোনরকমে আমি অনার্স পাশ করলাম। বাবা আর সহ্য করতে পারলেন না, আমাকে পাঠিয়ে দিলেন ইংল্যান্ডে। কিন্তু মাত্র মাস ছয়েকের মাঝে, আমাকে দূরে পাঠিয়েই কিনা জানিনা হার্ট এটাক করলেন, আমাদের ব্যাবসা আস্তে আস্তে খারাপের দিকে যেতে থাকলো। মাস্টার্স শেষ না করেই দেশে ফিরলাম আমি।

মন্তব্য (3)

মন্তব্য করুন