লেখকঃ ফরিদা আখতার মায়া
প্রিয় মা
আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছো। কতো দিন তোমার সাথে কথা হয়না। আমি ভালো আছি।
কতোদিন তোমায় দেখিনি আমি।পুকুর পাড়ের তালতলায় কতো দিন তোমায় খুঁজতে গেছি,সেই গর্তটায় ও উঁকি দিয়ে দেখেছি।
সবাই বলে তুমি আকাশের তারা হয়ে গেছো। তারারা নাকি সব দেখতে পায়, তুমি ও কি মা সব দেখতে পাও! আকাশের কোন তারাটি তুমি মা! দক্ষিণ পূবে জ্বল জ্বলে ঐ তারাটি? আমি জানি তারা হলে তুমি সেটিই হবে। মা তোমাকে খুব দেখতে মন চায় আর এই শীতের রাতে তোমার বুকে মুখ লুকিয়ে ওম নিতে ইচ্ছে করে। চাঁদনী রাতে তোমার কোলে মাথা রেখে রূপ কথার গল্প শুনিনা কতো দিন।
জানো মা আমায় এখন আর কেউ বুকে টেনে নিয়ে আদর করেনা। কাছে টেনে জানতে চায়না খেয়েছি কিনা? মাগো পূবের মাঠের ভিন্নী ধান কাটা হয়েছে মা। আর চিনি গুঁড়োর মৌ মৌ গন্ধে ভরেছে উঠোন।না মা খাওয়া হয়নি নতুন চালের পোলাও,আর ভিন্নী ধানের শিরনী। পৌষ পার্বণে যাইনি মামা বাড়ি,কেউ খবর নিতে আসেনি। ভাঁপা পিঠা,ম্যারা পিঠাও খাওয়া হয়নি তুমি নেই বলে! জানো মা রসুই ঘরের পিছনে কুল গাছে কতনা বাউল কুলে ভরেছে। নতুন মা সোনাইকে কতো কতো খেতে দিল,আমি শুধু চেয়ে চেয়ে দেখলুম। আমাদের কালো গাইয়ের লাল টুকটুকে একটা বাছুর হয়েছে। কালো গাইয়ের দুধটা ও ওরাই খায়।আমার খেতে মানা। পেটে অসুখ করবে যে! আমি আর স্কুলে যাইনা, বাজানের সাথে গরু নিয়ে মাঠে যেতে হয় সেই ভোর বিহানে। লেখাপড়াতো সোনাই করে, জানো মা আমাকে আর পড়াশোনার জন্য একদম বকুনি খেতে হয়না। নতুন মা ডাকছে খুকিকে কোলে নিতে হবে আর জল আনতে হবে। গোয়াল ঘরটা ও যে আমায় সাফ করতে হবে।
আজ আর নয়।ভালো থেকো তুমি।
ইতি
তোমার খোকা