চিঠিপত্রের মাস- ইতি “কবি” (পর্ব ৩)

cithi potro - Copy2

লেখক- মির্জা ফারহান

মহারাণি,

মাঝে মাঝে এত্ত শাসন কর! কাল অতো করে বললাম আর কিছুক্ষণ থাকো না আমার বুকের কাছে চুপটি করে, না তোমার বড্ড তাড়াহুড়া। আচ্ছা, তোমার রান্না করা, বাজার করা, সবার সবার অতো খেয়াল রাখা কী আমার চেয়ে বেশি দরকার। তোমার চিরুনীটা আমার বড্ড বেশি হিংসে হয়, কী সুন্দর যত্ন করে তোমার চুলে হাত বুলায়, আর আমার কাছে আসতেও তোমার কত ব্যাস্ততা। বলতো, ঐটুকু ম্যসেযে কী আর তোমায় ভালবাসার কথা বলে আমার পোষায়, আমার চাই তোমাকে সারাক্ষন। তোমাদের আধুনিকতা যার নাম দিয়েছে ২৪/৭.

মহারাণি, তোমার চোখে তাকিয়ে আমার কত কথা বলার আছে, আর তুমি শুধু আমাকে ঘুম পাড়াতে পাঠাও। বাস্তবতার কঠিন কপচানি কী তোমার সারাক্ষণ আমার সাথে না কপচানে চলে না! সব কিছুর ঊর্ধ্বে থেকে কি আমরা শুধু আমাদের জন্য থাকতে পারিনা। তুমি যার ঘরে আলোক ছড়াও সে কী তোমার আলোতে নিজেকে ভাসিয়েছে কখনো! তবু তোমার বাস্তবতা তবু তোমার দায়িত্ববোধ আমার চেয়ে ঢের বেশি প্রিয়? “পাগল তুমি” জানি হেসে বলছো, পাগল ই তো নয়ত তোমার জন্য সর্বস্ব জলাঞ্জলি দেয়ার দুঃসাহস করি! শোন বাস্তবতা তো আমারো আছে, দায়িত্বে অবহেলা করেছি তা- শত্রুও বলেনি কখনো। তবু তুমি যেখানে প্রায়োরিটি সেখানে সব কিছু ম্লান। কতটুকু সময় তোমাকে পাই বলতো, এসেই শুরু হয়ে যায় তোমার স্টেশানের ব্যাস্ততা। খেয়েছি কিনা, ওষুধ চলছে কিনা, শাওয়ার নিচ্ছি কিনা, ঘুমাচ্ছি কিনা, বই বেশি পড়ে মাথা ব্যাথা বাড়াচ্ছি কিনা! কেন এত গিন্নিপনা তোমার করতে হবে! তুমি শুধু ভালবাসবে আমাকে। ওসব নিয়ম আর দায়িত্ববোধের বাইরেও যে আমার একটা হৃদয় আছে, তুমি শুধু তার একটু খবর নাও না! আমার কাছে কিছুক্ষণ চুপটি করে থাকো। আমাকে দেখতে দাও “তোমায়”। ডুবে যেতে দাও তোমার রহস্যে, না তোমার সেখানেও ১৪৪ ধারা। সেখানে ও বাধা আমার প্রতি তোমার দায়িত্ববোধ আর চোখ রাংগানি ” শরীর খারাপ করবে”। 

মহারাণি, ইদানীং তুমি বড় বেশি শাসন কর, আমাকে একটু ও বেহিসেবি হতে দাও না। সব নেশা ছাড়িয়েছ তোমার নেশায় মাতাল করে। সিগারেটের ধোঁয়া আমার কাছে অসহ্য ঠেকে এখন, কেবল ডাভ শ্যাম্পু ছাড়া আর কোন ঘ্রাণ আমার জীবনে আছে বলে মনে হচ্ছেনা। পিপাসায় লোনা জল ছাড়া আর কোন পানীয় আর আকর্ষণীয় নয় আমার কাছে আর।

মহারাণি, কিভাবে কিভাবে এই বাউন্ডুলে ছন্নছাড়া কবিকে কাবু করে ফেলেছ বলতো, কোন কাগুজে আচঁল যে আমাকে বাধঁতে পারেনি, শত শত মাইল দূরে থেকেও কিভাবে বেধেঁছ এত ভালবেসে।

মহারাণি, ধন্যবাদ দিতে পারবো না, শুধু বলি ভালবাসি তোমাকে, আর এটা পৃথিবীর শেষ বাক্য হোক। ইশ, আবার রাগিয়ে দিলাম না!

স্রষ্টা ভাল রাখুক তোমাকে, বাচিঁয়ে রাখুক স্বপ্ন গুলোকে আমি থাকি বা না থাকি।

ইতি

“কবি”


মন্তব্য করুন