চিঠিপত্রের মাস- “প্রিয় তোমাকে”

cithi potro - Copy2

প্রিয় তুমি

আজ কত কত বছর পর তোমায় লিখছি বলো তো! ২০ বছর! উহু ১৯ বছর ১১ মাস ১২ দিন পর। শেষ চিঠিটা তুমি ফিরিয়ে দিয়েছিলে তাও তো ১৯ বছর। আমাদের বয়স তখন ১৬ আর ১৭। আমি বরাবরই তোমার মুগ্ধ ভক্ত, যদিও তুমি বিশ্বাস করতে চাইতে না, তোমার বিস্তর অভিযোগ ছিল আমার দূরন্তপনা নিয়ে। আর আমার অভিযোগ ছিল তোমার সময় কম দেয়া নিয়ে। আচ্ছা আমাদের কি ব্রেকআপ হয়েছিলো? সে তো কোন সম্পর্কে হয়! তোমার আমার কি সম্পর্ক ছিল কখনো! নামহীন সম্পর্ক ছিল আমাদের, বন্ধুত্বের চেয়ে অনেক অনেক বেশী, প্রেম কিংবা জাগতিক সম্পর্ককে ছাড়িয়ে ছিল কোন বন্ধন, সে বন্ধন কখনোই অগ্রাহ্য করা যায় নি, আমি করিনি, তুমি করতে পারো নি। স্কুলের শেষদিনে আমি প্রমিজ করেছিলাম আমি কখনো তোমাকে ছেড়ে যাব না, আমি কখনো তোমার সাথে রাগ করবো না আর অন্য কাউকে তোমার মত ভালবাসবো না। ১৪ বছরের কারো পক্ষেই এই প্রমিজের গুরুত্ব বোঝার ক্ষমতা থাকার কথা না, আমারও ছিল না, কিন্তু আমি প্রতিটা প্রমিজ রেখেছি। তোমার চেয়ে ভাল আর কখনোই কাউকে বাসা হয়নি। কষ্ট পাচ্ছি আজীবন রাগ করিনি কোনদিনও, তোমার উপর রাগ করা যায়নি, রাগ করার কোন অপশন তুমি রাখোনি। তোমার প্রতিটা ডিসিশান এতটাই যৌক্তিক, তুমি আমার পাগলামি প্রশ্রয় না দিয়েও আমাকে ম্যানেজ করে গেছ, আমার অভিযোগ গুলো খুব ঠুনকো লাগে সেখানে।

সবার সামনে আমাদের অসংখ্যবার দেখা হয়, হয়েছে, যেখানে বন্ধুরা থাকলে আমাদের সম্বোধন বেস্ট ফ্রেন্ডের মতো ‘তুই’। কিন্তু যতবার তোমার সাথে আই কন্টাক্ট হয়, আমি ঠিকই জানি তোমার চোখের ভাষা। তুমি আমি সবই চেয়েছি শুধু কখনো একসাথে থাকতে চাইনি। তুমি বলতে আমাকে বাঁধার ক্ষমতা তোমার নেই আর আমি জানতাম তোমাকে আমি কখনই জাগতিক কোন সম্পর্কে চাই না, কখনো কোনদিন তোমাকে স্পর্শ করার কথা আমি স্বপ্নেও ভাবিনা। তুমি আমার কাছে এমন প্রিয় কেউ যাকে সাধনা কিংবা আরাধনা করা যায় কখনো গ্রহন করা যায় না।

তোমার সুখী সংসারি চেহারা আমাকে শুধুই আনন্দ দেয়, তোমার বা আমার বর্তমানের বাস্তবতা, আমাদের স্বপ্নের দুনিয়ার চেয়ে এতটাই আলাদা যে কখনোই বাস্তবতা স্বপ্নকে অতিক্রম করতে পারে না, তোমার জন্য আমার কোন দুঃখবোধ নেই, না পারার দীর্ঘশ্বাসও নেই, যা আছে তা কেবলই পরিতৃপ্তি, কারন আমি জানি দুনিয়ার কাছে তুমি যা-ই হও না কেন, “তুমি শুধু আমারই”। সেটা সেই তের বছর বয়স থেকে পাওয়া। ভাল থেকো অনেক, ‘ভালবাসি’, নতুন করে বলার কী আছে, জানোই তো।

তোমার

       “আমি”

মন্তব্য করুন