কবির নাম- ফারজানা তাইয়্যুব
শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ছিল দুটো চোখের মণি
ছোট ছেলে জামী আর বড়ছেলে রুমি।
ছেলেদের তিনি মানুষ করেছেন সত্যিকারের মানুষ হবার তরে
দুজনেই ছিল ভীষণ সাহসী কোনোকিছুকেই না ডরে।
রুমি পড়তো বুয়েটে যখন মুক্তিযুদ্ধের কাল
দুচোখে সে স্বপ্ন দেখে ধরবে যুদ্ধের হাল।
আমেরিকার ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ রুমি পেলো
বাসায় সবাই ভীষণ খুশি ভোজের আয়োজন হলো।
রুমি বসে এককোণে মনমরা হয়ে
মা শুধালেন কি হয়েছে কে গেলো খুশি লয়ে?
ইতস্তত করে রুমি বলল মাকে তার মন যা চায়
তার কথা শুনে মায়ের চোখ দুটো চমকায়।
উত্তরে মা সাফ জানালেন কিছুতেই সম্ভব নয়
পায়ে পরে রুমি বলল,কি করে মা হয়?
দেশমাতা যে বন্দী আমার শেকল পড়া তার পায়
তাকে ফেলে কি করে মা বিদেশে চলে যাই?
নিজেকে আমি কোনোদিনও পারবো কি ক্ষমা করতে?
আমি চাই যুদ্ধে গিয়ে দেশের হয়ে লড়তে।
রাগের মাথায় বললেন মা,দূর হয়ে যা
দেশের জন্য তোকে আমি কুরবানী দিলাম যা।
বলেই মা অবাক হলেন একি বললেন তিনি
মায়ের মুখে তো একথা শোভা পায়না কখনি।
রুমি গেলো আগরতলা যুদ্ধের ট্রেনিং নিতে
আজাদ,বেনু সঙ্গী হলো তার রওনা হলো ছদ্মবেশে।
ক্র্যাকট প্লাটুন আর গেরিলাদল বানালো তারা ঢাকায়
তাদের অত্যাচারে পাকিস্তানীদের টিকে থাকা হলো দায়।
একদিন সকলে পড়লো ধরা নিলো তাদের গোপন আস্তানায়
শত অত্যাচারেও তারা মুখ খুললো না কেউই।
অনেক অনেক মা খুজলো পেতে তাদের খবর
একজন মা কে দেখিয়ে দিলো এই যে রুমির কবর।
চোখের পানি শুকিয়ে গেছে শুকিয়ে গেছে বুক
এতো কষ্টের পরেও খুললো না তার মুখ।
শহীদ রুমিকে আজো জাতি স্মরণ করে পরম শ্রদ্ধা ভরে
যে জীবন হলো বলিদান বাংলা মায়ের তরে।