
বাংলার প্রথম স্বাধীন রাজা ছিলেন শশাঙ্ক যিনি ৬০৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ৬৩৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেছিলেন। সম্ভবত তিনি গুপ্ত সম্রাটদের অধীনে একজন সামন্তরাজা ছিলেন । হর্ষবর্ধনের ভ্রাতা রাজ্যবর্ধনকে ইনি হত্যা করেন। এই জন্য হর্ষবর্ধন-এর সঙ্গে তার যুদ্ধ হয় । তার শক্তি বৃদ্ধি হতে দেখে কামরুপ রাজ ভাস্করবর্মন তার শত্রু হর্ষবর্ধনের সঙ্গে মিত্রতা স্থাপন করেন । শশাঙ্ক চালুক্যরাজ দ্বিতীয় পুলকেশীর সাহায্য পেয়েছিলেন এদের বিরুদ্ধে।শশাঙ্ক পরম শৈব ও বৌদ্ধবিদ্বেষী ছিলেন। পাটলীপুত্র ও কুশীনগরে বহু বৌদ্ধকীর্তি ধ্বংস করেন। ৬৩৭ খ্রিষ্টাব্দে শশাঙ্ক-এর মৃত্যুর পর তার রাজ্যের পতন ঘটে। শশাঙ্কই প্রথম বাংলার রূপরেখা দিয়েছিলেন।
মাৎস্যন্যায়
৬৩৭ খ্রিষ্টাব্দে গৌড়রাজ শশাঙ্কের মৃত্যুর পর বাংলার ইতিহাসে একঘোরতর নৈরাজ্যের সৃষ্টি হয়। যা প্রায় দেড়শো বছর স্থায়ী হয় ।এই সময় বাংলাতে বহু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যের সৃষ্টি হয়। আত্মকলহ,গৃহযুদ্ধ,গুপ্তহত্যা,অত্যাচার প্রভৃতি চরমে ওঠে ।বাংলার সাধারণ দরিদ্র মানুষের দুর্দশার শেষ ছিল না ।
স্থায়ী প্রশাসন না থাকাতে বাহুবলই ছিল শেষ কথা।বাংলায় প্রতিষ্ঠিত হয় অভিজাততন্ত্র এই সময় প্রভাবশালী লোকেদের সভা প্রকৃত্পুঞ্জ গোপাল নামের এক রাজাকে নির্বাচন করেন, তিনি মাৎস্যন্যায় এর পতন ঘটান।
পাল বংশ:
মাৎস্যন্যায়ের সময় বাংলার বিশৃঙ্খলা দমনের জন্য বাংলার মানুষ নির্বাচনের মাধ্যমে গোপাল নামক এক সামন্তরাজাকে বাংলার রাজা রূপে গ্রহণ করেন ।গোপালই হলেন পাল বংশের প্রতিষ্ঠাতা ।পাল বংশের সবচেয়ে শক্তিশালী দুই রাজা ছিলেন ধর্মপাল (রাজত্বকাল ৭৭৫-৮১০ খ্রিষ্টাব্দ) এবং দেবপাল (রাজত্বকাল ৮১০-৮৫০ খ্রিষ্টাব্দ) । পাল বংশের স্থায়ীত্বকাল ছিল প্রায় ৪০০ বছর।পাল বংশের অন্য উল্ল্যেখ যোগ্য রাজা ছিলেন নারায়ণপাল ৮৬০-৯১৫ , মহীপাল ৯৭৮-১০৩০, রামপাল। তাঁর শাসনকালে শিল্প কলায় বাংলা শিখরে উঠে । কিন্তু এই সময় বহু ব্রাহ্মণ বৌদ্ধ অত্যাচারে বাংলা ত্যাগ করে উত্তর ও পশ্চিম ভারতে চলে যায় ।